জীবনের উদীয়মান উদ্যমী তারুণ্যে পেয়েছিলাম একজন দার্শনিক মার্ক্সকে। জার্মানীর হিটলার ‘মহাউন্নত’ জাতি আর রক্তের ‘শ্রেষ্ঠত্বে’ ধ্বংসের মহাপ্রলয় ঘটিয়ে পৃথিবীর মহাপ্রভু হতে কী না করেছেন! আর সেই জার্মানীরই দার্শনিক কার্ল মার্ক্স বলা যায় তাঁর মেধা আর চিন্তাধারার প্রবল তরঙ্গে উদ্বেলিত করেছেন গোটা বিংশ শতাব্দীকে।
‘সর্বহারার হারাবার কিছু নেই, একমাত্র শৃংখল ছাড়া’ এমন বাক্যে আমাদের অনেকের যৌবন চমকিত, আলোচিত, উদ্দীপিত হয়েছিলো। গোলাপের মাঝে গোলাপ হতে চেয়েছিলেন কবি সুনীল। শ্রমিকের মতো শ্রমিক হতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন বিপ্লবের লাল ফুল তাজুল।
কার্ল মার্কসের বিশ্লেষণের মোহিনী অরণ্যে প্রবল সাহসিক ভ্রমণে কতো শ্বাপদসংকুল বিপদ বরণ করে নিয়েছেন হেসে হেসে স্বেচ্ছায় কত লাখো মানুষ এবং একজন চে গুয়েভারা। একবিংশ শতাব্দীর তরুণ সমাজও নবউজ্জীবনে চে গুয়েভারার বিপ্লবী আত্মদানের মহান বীরত্বকে নানারূপে সম্মানিত করে চলেছেন।
মার্কসের নিগূঢ় দার্শনিক ব্যাখ্যার সড়ক ধরে বিংশ শতাব্দীতে একগুচ্ছ দেশ সমাজতন্ত্রের পথ বেছে ‘সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব’ গড়ে তুলছিলো। ১৯৭২ সনে কমরেড মণি সিংহ ঢাকার জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন, ‘বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর পঞ্চম সমাজতান্ত্রিক দেশ।’ দুই হাজার সালের দিকে বাংলাদেশে মেহনতী মানুষের বিপ্লব সংঘটিত হবে এমন প্রয়াসে কাজ করছিলো হাজার হাজার কর্মী।
১৯৯০ সনে সমাজতন্ত্রের মূল দূর্গ হিসাবে পরিচিত খোদ সোভিয়েত ইউনিয়নের কাঠামো যখন ভেঙ্গে পড়লো, সেদেশের মানুষসহ পৃথিবীর সমাজতন্ত্রকামী কোটি কোটি মানুষ বিস্মিত, বিমূঢ় এবং বিক্ষুব্ধ হয়েছিলো। তারপরতো এক বদলে যাওয়া পটভূমিতে সমাজতন্ত্রের আন্তরিক অনুসারীরা বিশেষত: পথ ভিন্নতার, নবপথ অনুসন্ধান কিংবা পূর্বের পথে অটল থাকার নানা প্রশ্নে পৃথিবীজুড়েই এক জটিল পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত হলো। খোদ বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র অনুসারীদের অনেকেই রাজনৈতিক দলীয় কাঠামোতে সক্রিয় থাকার উৎসাহ পেলোনা।
একদা সক্রিয় মানুষেরা কার্যত: নিষ্ক্রিয় থাকতে পারেনা। বিকল্প নানারূপ সামাজিক-ধর্মীয়-সংস্কারমূলক কাজের ভিতর অনেকেই ডুবে গেছেন। মুক্তির পথ অনুসন্ধানে নানাজন নানাভাবে ব্যাপৃত। আর ঠিক এমন সময়েই তথ্য-প্রযুক্তি-যোগাযোগের ভুবনে শুরু হলো মাথা খারাপ তোলপাড়। আমরা যারা হারিকেন জ্বালাবার বিস্ময় নিয়ে শৈশব গড়েছি, তারা এখন হাতের মুঠোয় ধরে রাখা ফোনে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তরে প্রয়োজনীয় কাজে সংযুক্ত হতে পারি।
পথের পাঁচালীতে অপু এবং দুর্গার রেলগাড়ী দেখার সেই অপার বিস্ময়ের পাশাপাশি ভাবি আমার অবস্থান নিবাসে চার বছর পেরুনো একজন শিশু ইন্টারনেটের বদান্যতায় কোথায় কোন ভুবনে চলে গেছে! আর ফেসবুক? ঢাকায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ছবি পোস্ট করার পরমুহূর্তে পৃথিবী জুড়ে অবস্থান নেয়া স্বজন পরিজনদের লাইক এবং কমেন্টের সেকি আন্তরিক ছড়াছড়ি। অন্তত এক্ষেত্রে প্রকৃতই বিশ্বটুকুন যেনো একটি গ্রামে পরিণত হয়ে গেছে। আর স্ট্যাটাস শেয়ার তো আছেই। মূল অনুষ্ঠানে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকেই জীবন্তভাবেই যোগ দেবার ‘স্কাইপ’ প্রযুক্তি এখন নগরভুবনের প্রায় ঘরে ঘরেই। এখানে বিংশ শতাব্দীর বিশ্ব বাঙালি কবির মতো করে সমস্বরে জোরে শোরে গেয়ে উঠতে ইচ্ছে করছে যা পেয়েছি যা নিয়েছি তুলনা তার নাই। হাঃ ! কবিগুরু এই তেলেসমাতি তথ্য প্রযুক্তি যোগাযোগ বিপ্লব দেখে যেতে পারেন নি।
জীবনের একেবারে পড়ন্ত বেলায় এসে আনাড়িভাবে ফেসবুক কান্ডের ঘনঘটায় পড়ে গেলাম। জীবন শুরু করেছি মার্ক্স অনুসৃত কর্মকান্ড দিয়ে। আর এখন? এক বাচ্চা ছাওয়াল মার্ক জাকারবার্গ এ কি তোলপাড় হৈ রৈ কাণ্ড শুরু করে দিলো!
এককালে মনের কথা মনের ভাব প্রকাশে কতো বিস্তর হিমালয় বাধা ছিলো! এখন? পৃথিবীতে মানুষের কত সাধ, স্বাদ, স্বপ্ন, কল্পনা, কাঁচাপাকা ভাবনা, বানানের শুদ্ধাশুদ্ধির বারোটা বাজানো, কিন্তু অসাধারণ বর্ণাঢ্য এক হৃদয়ের বদ্ধ দুয়ার খুলে দেবার, অবারিত বাতাস বইয়ে দেবার এক বিশাল প্রান্তর। আবার গোপনে কথা বলবেন? সে জন্য তো রয়েছে ইনবক্স। এতোকাল মার্ক্স নাচিয়েছেন, এখন মার্ক নাচাচ্ছেন। মেধায় আর বুদ্ধিতে যারা যোগ্য, আসলে চালাবেনতো তারাই। আগে তুমুল তথ্য খরা, এখন তথ্যের প্রবল বন্যা। এক জীবনে এমন উল্টাপাল্টা পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো ভাবিনি।
ফেসবুক ইত্যাদির উপর বিরক্ত নানা বয়েসিদের দেখছি। প্রাইভেসি বলে নাকি কিছুই আর থাকছে না। ফেসবুক নেশায় কর্তব্য কাজ সব নাকি ভন্ডুল হয়ে যাচ্ছে। অনেক বয়েসী মানুষ প্রযুক্তিবান্ধব হতে পারছেন না প্রকৃতিবশত। আর টিনএজার প্রজন্ম? পৃথিবী জুড়ে ওরা সংক্ষিপ্ত নবভাষায় বাণী আদান প্রদাণ করে চলেছে অঙ্গুলি প্রকৌশলে। ফেসবুকে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, স্ট্যাটাসতো চলছেই। ছবি তুলছে, পোস্ট দিচ্ছে। এখন ফেসবুকের পাশে আছে যোগ্য সাথী টুইটার।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস বয়ানের তথ্যপুঞ্জে বিশেষত: তরুণবয়সী দম্পতিরা, ভালোবাসার বন্ধন জুটিতে একটু খটমট বাঁধলেই ‘সিংগল’কিংবা ‘নট ইন রিলেশন’ লিখে ঝগড়ার প্যাঁচটা আরো একটু জটিল করে দেয়। ঝগড়া মিটে গেলে ‘সিংগল’ পুনঃ ‘ম্যারিড’ হয়ে যায়। বোঝা যায় মান অভিমানেও ফেসবুকের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। নবপ্রজন্মের নবানন্দ! ঈর্ষা করে আর কোনো লাভ নেই হে গোলাম হোসেন !
‘আশীর্বাদের’ কথা বলা হলো অনেক, এবার ‘অভিশাপ’ এর কথা বলি। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক-ধর্মান্ধ-ধর্মব্যবসায়ী শক্তি বহুকাল ধরে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের সুধা পান করে চলেছে। কক্সবাজারের ঐ অঞ্চল ঘিরে অশান্তি সৃষ্টি করে একটি আরাকানী মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের নকশা বহুকাল ধরে কার্যকর রয়েছে। সেই নকশা অনুযায়ী এই এলাকায় নিরীহ বৌদ্ধ জনগণের সঙ্গে স্থানীয় মুসলমানদের গোলযোগ বাঁধিয়ে দিয়ে ষড়যন্ত্র গভীরতর করার প্রক্রিয়া জোরদার করতে অপব্যবহার করা হলো ঐ ফেসবুকের ‘ট্যাগ’ প্রযুক্তিকেই।
এক বৌদ্ধ তরুণকে হযরত মুহম্মদ (সঃ) কেন্দ্রিক অবমাননাকর স্ট্যাটাস ‘ট্যাগ’ করা হলো এবং জানিয়ে দেয়া হলো ঐ ছেলেটার ফেসবুকে রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে অবমাননা করা হয়েছে। তারপর? ফটোকপি। বিশাল গুজবের গজব প্রচারণা এবং রামুতে বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপনার উপর শত শত ক্ষুব্ধ মুসলমানের ঝাঁপিয়ে পড়া। শান্তির এক দীর্ঘকালীন এলাকা পরিণত হলো স্থায়ী অশান্তির এলাকায়। দেশ বিদেশে এই অশান্তির খবর ছড়িয়ে পড়লো। বৌদ্ধ জনগণ অধিষ্ঠিত সকল দেশে, সকল স্থানে এই সাম্প্রদায়িকতার নবমাত্রার সংবাদ প্রচারিত হলো। ওদিকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান আর বৌদ্ধ জনগণের ভিতর সম্পর্কের রক্তারক্তি অবনতি ঘটলো। সমুদ্র পথে হাজারো রোহিঙ্গা বাঁচার পথ খুঁজলো। মানবপাচারের এক নৃশংস অধ্যায়ের কথাও ইতোমধ্যে জানলো পৃথিবী।
একই স্টাইলে দেশের কতিপয় স্থানে হিন্দু তরুণ কর্তৃক রাসুল (সাঃ) অবমাননার এহেন সাজানো ঘটনা ঘটতে থাকলো। অশান্তি ছড়িয়ে পড়লো নানাদিকে। এদিকে সামাজিকভাবে শুরু হলো এক ভয়ংকর নৈতিক বিধ্বংসী কাজ, মানবাধিকার বিপর্যয়ের নৃশংস কাণ্ড। দেশের নানা প্রান্তে, নানা স্থানে চললো নারীদের জোর করে, ঠকিয়ে এনে ধর্ষণ ইত্যাদি নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ছবি তুলে মোবাইল যোগে তা ছড়িয়ে দেয়ার বীভৎস অপারেশন, একের পর এক। এতে কত নারী আত্মহনন করলো, কতো নারীর জীবন একশেষ তছনছ হয়ে গেলো। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ওদের জীবনে বয়ে আনলো নারকীয় অভিশাপ।
‘আশীর্বাদ’ আর ‘অভিশাপ’-এই দ্বৈরথের মধ্য দিয়েই দুনিয়া জুড়ে এখন ‘স্মার্ট’ ফোনের চলছে বিপণন বিজয়াভিযান। নবপ্রজন্ম এখন স্মার্ট ফোন ছাড়া জীবন ভাবতেই পারে না। আমার বিচারে ‘আশীর্বাদ’ এর পাল্লা অনেক ভারী। এখন ‘ফ্রিল্যান্স’ ডিজিটাল জীবিকায় লাখ লাখ তরুণ-তরুণী। সারা দেশে পণ্য বিপণনে তথ্য- যোগাযোগ প্রযুক্তির সে কি ধন্বন্তরী অবস্থান!
ফেসবুকের যে তথ্য মানিক নিয়ে আজকের এই লেখার প্রেরণা কিংবা উপজীব্য তারই বয়ান পরিশেষে। সম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকার কার যেন পোস্টিং-এ পড়ে মনটা আমার কান্নায় রক্তাক্ত হয়ে গেলো! সেই তথ্য মানিকটুকু বিস্তৃত করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছি:
বন্ধুগণ, নতুন প্রজন্ম কতটুকু তাঁকে চেনে, জানে কিংবা পছন্দ করে জানি না। অনেককাল ধরে আমাদের ছোট পর্দা বড় পর্দা শাসন করে চলেছেন ডলি জহুর নামের এক অভিনেত্রী। বিশেষত: চ্যানেলবিহীন যুগে বিটিভি ধারাবাহিকে হুমায়ূন আহমেদের ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে ‘ভাবী’ চরিত্রে বাংলাভুবন জয় করে ফেলেছিলেন ডলি জহুর। তাঁর অকাল প্রয়াত স্বামী জহুর সাহেবও ছিলেন উচুঁ মাপের অভিনেতা। আমরা এতোকাল যা কেউ জানতামনা সেই অকথিত অধ্যায় তিনি ব্যক্ত করেছেন এক পত্রিকায়।
শেখ কামালদের সঙ্গে একই নাট্যদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় যুক্ত ছিলেন ডলি জহুর। ছোটবোন শেখ রেহানার সতীর্থ বান্ধবী ডলি জহুর। মহড়ায় দেরী হলে ছোটবোনের বান্ধবীকে সম্মানের সঙ্গে দীর্ঘকাল অনেক রাতে পৌঁছে দিতেন শেখ কামাল। সেই কথা স্মরণ করে ডলি জহুর শেখ কামাল বিরোধী হীন এবং জঘন্য প্রচারণায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক ছাত্রীকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করছেন কামাল এমন প্রচারণায় তার অনেক কষ্ট পাবার কথা জানিয়েছেন ডলি। বলতেন, অনেক সময় পকেটে রিকশায় পৌঁছে দেবার টাকাও থাকতো না শেখ কামালের। পিতার পদাধিকারের এতটুকু দম্ভ পোষণ করতেন না শেখ কামাল। অথচ তাঁকে কী ভয়ংকর ভিলেনের ভাবমূর্তিতে নিন্দামন্দ করা হয়েছে কতো কাল ধরে। এদিকে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হননের পর অবৈধ সম্পদ, অবৈধ ব্যাংক হিসাব কোনো কিছুর প্রমাণতো আজো কেউ দিতে পারেনি!
শেখ কামালের পছন্দ হলো সেসময়কার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেট সুলতানা নামের স্বিগ্ধ রুচিশীল মেয়েটিকে। ডলিকে কত শত বার যে কামাল অনুরোধ করলো দূত হয়ে সে খবর পৌঁছে দিতে সুলতানার কাছে। সংকোচে, ভয়ে ডলি তা পারেনি। আড়াই বছর পর মনে শক্তি সঞ্চয় করে কামাল নিজেই সুলতানাকে তার হৃদয়সংবাদ জানালো। সুলতানা বললো ভালোবাসা, পূর্বরাগ এসব তার পছন্দ নয়। প্রয়োজনে সুলতানার বাসায় যেন প্রস্তাব পাঠানো হয়। অবশেষে বাসায় প্রস্তাব পাঠিয়েই কামাল-সুলতানার ক্ষণস্থায়ী পরিবারটি নির্মিত হয়। আমার ফেসবুক বন্ধু (ডিজিটাল ভুবনে রচিত পরিচয়) শাহজাহান চাকলাদার ফেসবুকেই জানালেন, সুলতানার ভাই মোস্তফা তার নিকট বন্ধু। সেই মোস্তফাই বলেছে কামাল-সুলতানা জুটি পারিবারিক প্রস্তাবনার মধ্য দিয়েই গড়ে ওঠে।
এতো বড় ক্ষমতাশালী পিতার পুত্রকে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙ্গে ডাকাতি করে টাকা জোগাড় করতে হয়, এমন পচা এবং ভয়ংকর গল্প তখন কারা ফেঁদেছিলো? তাদের একজনতো তদানীন্তন জাসদ-উল্কা আসম আব্দুর রব। যিনি বলেছিলেন, শেখ মুজিবের পিঠের চামড়া দিয়ে জুতা বানাবে, না একান্তে নয়, প্রকাশ্য জনসভায়। আর বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে জঘন্য অপপ্রচারে মেতেছিলো কারা? সেই ছবি তোলার সাংবাদিক এখন পৃথিবীতে নেই। সেই পত্রিকার উত্তরাধিকারী স্বত্ত্বাধিকারী এখন শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায়।
প্রচারণা ছিলো রক্ষীবাহিনীর সব সদস্য ভারতীয় সেনা। অনেকেই বিশ্বাস করতেন। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতের পর সেই রক্ষীবাহিনীকে মিলিয়ে দেয়া হলো নিয়মিত সেনাবাহিনীতে। এই মিথ্যাচারের বক্তা এবং পত্রিকা খুঁজে বার করা কঠিণ কিছু নয়। বঙ্গবন্ধুর দুটি সন্তানের বিয়ে উপলক্ষে যে সাধারণ মাপের আয়োজন হয়েছিলো, তার চেয়ে শতগুণ জম্পেশ আয়োজন হয় এখন মধ্যবিত্তের যে কোনো বিবাহ অনুষ্ঠানেই।
বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবার আমাদের বাংলাদেশের মানুষদের অনেক দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বলতেন, অনেক কিছুই দিতে পারিনি নবজাত বিশৃঙ্খল দেশে, কিন্তু স্বাধীন দেশের একটা সবুজ পাসপোর্টতো দিয়েছি তোমাদের সবাইকে।
সবারই সবলতা-দুর্বলতা আছে বঙ্গবন্ধু। আপনারও। শেখ কামালেরও। কিন্তু আপনারা বাংলা ভুবনকে যা দিয়েছেন, সেটা অনুধাবন করার ক্ষমতায় এদেশে যে দীনতা, সেই দীনতা ক্ষমা করুন।