ফেইক নিউজ বা ভুয়া সংবাদ প্রচার বন্ধে গণমাধ্যমগুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, নিজেদের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে, গণমাধ্যমকে রাষ্ট্র তথা সমাজের সমালোচকের ভূমিকায় ফিরে যেতে হবে।
‘নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেইক নিউজের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা প্রতিটি গণমাধ্যমে ভুয়া সংবাদ যাচাইয়ের জন্য আলাদা ডেস্ক চালুরও সুপারিশ করেন।
তারা বলেন, ভুয়া সংবাদ প্রচারে বিরত থাকাই এখন যথেষ্ট নয়, কোনটা মিথ্যা সংবাদ তাও পাঠকের কাছে প্রকাশ করা দরকার।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস আয়োজিত এ সেমিনারে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টারে’র সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, একটা ভুয়া সংবাদের কারণে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কারা, কোন ফেইক নিউজ প্রচার করছে, যত দ্রুত সম্ভব তা প্রকাশ করা উচিত। সামাজিক মাধ্যমে দেখামাত্র কোনো সংবাদ ছড়ানোর আগে শিক্ষত মানুষের উচিত নিজেকে প্রশ্ন করা, তিনি যে সংবাদ অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করছেন সেটা ফেইক নিউজ কি না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. গীতি আরা নাসরিন বলেন, মানুষের কাছে সরকার, এনজিও, মিডিয়া তার আস্থা হারিয়েছে। হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষ কাউকে বিশ্বাস করেছে না, করতে পারছে না। এই আস্থাহীনতা থেকে একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। শূন্যতার কারণে ফেইক নিউজ সৃষ্টি হচ্ছে। মূলধারার গণমাধ্যম যখন ঠিক খবরটা দিতে পারছে না তখনই গুজব তৈরি হয়।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে সিটিজেন জার্নালিজমকে জোদার করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যমকে পাশ কাটানোর চেষ্টা না করে সাংবাদিকতার শিক্ষা (মিডিয়া লিটারেসি) বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেয়ার উপরও গুরুত্বারোপ করেন ড. গীতি আরা নাসরিন।
সেমিরারে আরো বক্তব্য রাখেন ‘নাগরিক টিভি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক, ‘আর্টিকেল ১৯’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর তাহমিনা রহমান এবং এনটিভি অনলাইনের প্রধান ফখরুদ্দিন জুয়েল।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এশিয়া প্রধান জুলিয়ানা ইয়ুতি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিসি বাংলার সাংবাদিক আকবর হোসেন।