চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ফাস্টফুডের নামে ‘বিষফুড’, ৪ লাখ টাকা জরিমানা

রাজধানীর নিউমার্কেটের ফাস্টফুডের দোকানে অভিযান চালিয়ে পচা ফ্রাইড রাইস, পচা মাংস, পচা চিংড়ি, নুডুলস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আম, আপেল, সসের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

‘‘ফাস্টফুডের নামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল এই বিষফুডগুলো, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রির দায়ে ৮টি ফাস্টফুড দোকানকে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।’’

রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমানের নেতৃত্বে নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ডিএমপি’র পক্ষে এসি ডিবি (দক্ষিণ) শামসুল আরেফিন ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. গিয়াসউদ্দিন ফারুকী নেতৃত্ব দেন। এছাড়া মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহিন ও কোষাধ্যক্ষ মো. জুম্মন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের শুরুতেই ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামে একটি দোকানে অভিযানকালে ম্যাজিস্ট্রেট মো. মসিউর রহমান তেলাপোকায় খাওয়া আপেল ফ্রিজে দেখতে পান। একই দোকান থেকে ফাঙ্গাস পড়ে থাকা কাবাব উদ্ধার করা হয়।

এরপর অভিযান চালানো হয় ওয়েস্টার্ন ফুড, অ্যারোমা ফুড, কিং ফুড, ক্যাপিটাল ফুড, আল-আমিন ফুড, সৈকত ফুড, ক্যাপ্রি ফুড, ফুড পার্কে। সবগুলো দোকান থেকে বাসি খাবার জব্দ করা হয়।

দোকানিরা স্বীকার করেন তারা সুকৌশলে ক্রেতাদের পুরনো বাসি খাবার খাইয়ে থাকেন।

‘‘অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে ওই রেস্টুরেন্টের মালিকরা পালিয়ে যান। মালিকদের না পাওয়ায় প্রত্যেক দোকানের একজন কর্মীকে আটক করে পুলিশ। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত আট রেস্টুরেন্টকে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও আটক কর্মচারীদের দণ্ড দেন।’’

অভিযান শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, জরিমানার টাকা দোকান মালিকদের পরিশোধ করতে হবে। জরিমানা পরিশোধ না করলে ও রেস্টুরেন্ট মালিকদের পাওয়া না গেলে দোকানগুলো সিলগালা করে দেওয়া হবে। এছাড়া আট কর্মচারীর প্রত্যেককে তিনমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

রাজধানীর নিউ মার্কেটের মতো মার্কেটে ফাস্টফুডের নামে এ ধরনের পচাবাসি, দুর্গন্ধময় খাবার বিক্রি অপরাধের শামিল বলেই মন্তব্য করেছে প্রত্যক্ষদোষী ও উৎসুক জনতা। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালতের এমন অভিযানকেও সাধুবাদ জানান তারা।

রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ফাস্টফুড ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচন করা হলো, সারা বছর কিভাবে মানুষ খাবার নিয়ে আরেক মানুষের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে?

শপিং করতে আসা লালবাগের বাসিন্দা জাহানারা খাতুন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমার নাতী নাতনীরা ফাস্টফুডের জন্য পাগল, কিন্তু আজ যে অবস্থা দেখলাম তাতে ফাস্টফুড নামক বিষ কিনে খাওয়া যাবে না। এতোদিন আমরা পয়সা দিয়ে বিষ খেয়েছি। জনগণের সামনে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ।

পুরান ঢাকার শহীদুল আলম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শুধুমাত্র রমযানকে কেন্দ্র করে নয় সাধারণ জনতা চায় সারা বছর অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ডিএমপি’র ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকুক।

নিউমার্কেটে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন: দোকান মালিক সমিতির কঠোর মনিটরিং থাকার পরও যারা পচা-বাসি খাবার ক্রেতাদের খাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।