ছোটোবেলার আদর্শ সেরেনা উইলিয়ামসকে মাত্র ৭৯ মিনিটে ৬-২, ৬-৪ সেটে হারিয়ে ইউএস ওপেন টেনিসের শিরোপা জিতেছেন জাপানের ২০ বছর বয়সী খেলোয়াড় নওমি ওসাকা। তিনিই প্রথম জাপানি মহিলা টেনিস খেলোয়াড় যিনি কোনো গ্র্যান্ডস্লাম জিতলেন।
অন্যদিকে আপাতত ২৪তম গ্র্যান্ডস্লামটি পাওয়া হল না সেরেনার। সেটি পেলেই অস্ট্রেলিয়ার মার্গারেট কোর্টকে ছুঁয়ে ফেলেতেন তিনি।
কিন্তু এদিনের ফাইনাল আর পাঁচটা অঘটনের মতো নয়। সেরেনা এবং চেয়ার আম্পায়ারের দ্বৈরথে তা হয়ে উঠেছিল ঘটনাবহুল। দ্বিতীয় সেট চলাকালীন চেয়ার আম্পায়ার কার্লোস র্যামোস লক্ষ্য করেন সেরেনার কোচ প্যাট্রিক মৌরেতাগলৌ, ইশারার মাধ্যমে তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন।
তখন আম্পায়ার, সেরেনাকে বলেন এটা ‘প্রতারণা’। সেরেনা তীব্রভাবে তার বিরোধিতা করে বলেন, জেতার জন্য জীবনে কখনো তাকে প্রতারণার সাহায্য নিতে হয়নি। তিনি মেয়ের মা, তিনি জানেন তার মেয়ের জন্য কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
এরপর আরো একটি ঘটনায় সেরেনা নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে কোর্টে র্যাকেট ভেঙে ফেলেন। শাস্তি হিসেবে ওসাকাকে এক পয়েন্ট পেনাল্টি দেন আম্পায়ার। ক্ষোভে ফেটে পড়ে সেরেনা। বলেন, ‘আপনি আমাকে প্রতারক বলেছেন, আপনার আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আপনি আর কোনোদিন আমার ম্যাচে আম্পায়ারের চেয়ারে বসতে পারবেন না’।
বাগবিতন্ডা এতই তীব্র হয়ে ওঠে যে একসময় আম্পায়ারকে সেরেনা বলেন, ‘আপনি চোর, আপনি আমার পয়েন্ট চুরি করেছেন।’
এই বক্তব্য শুনে ‘গালাগালি’ দেয়ার অভিযোগে সেরেনার থেকে একটি গেম ওসাকাকে দিয়ে দেন আম্পায়ার। দৃশ্যতই এসময় ভেঙে পড়ে সেরেনা।
পরে বলেন, অনেক পুরুষ খেলোয়াড় এমন নানা কথা আম্পায়ারদের বলেন, কিন্তু সেজন্য তাদের কোনো শাস্তি পেতে হয় না। তিনি মহিলা বলেই তাকে এই শাস্তি দেয়া হল। ঘটনার একটু পরেই ম্যাচ জিতে যান ওসাকা।
পুরস্কার বিতরণের সময় ওসাকাকে বিদ্রূপ করছিলেন উপস্থিত দর্শকদের একটা বড় অংশ। তা দেখে কেঁদে ফেলেন জাপানি তরুণী। তখন অবশ্য তার পাশে দাঁড়ান সেরেনা। দর্শকদের বলেন, যে ভালো খেলেছে, তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া উচিত।
ম্যাচের পর সাংবাদিকদের কাছে সেরেনার কোচ স্বীকার করেন, তিনি সেরেনাকে খেলা চলাকালীন বাইরে থেকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার দাবি, এটা দুনিয়ার সব ম্যাচে সব কোচই করে থাকেন।