জাহিদ মানেই ‘পাগলামি’, জাহিদ মানেই ‘উল্টাপাল্টা’। জাহিদ মানেই যে কোন আড্ডা বা প্রেস কনফারেন্সে হাসির রোল। বলছি বাংলাদেশ জাতীয় দলের উইঙ্গার জাহিদ হোসেনের কথা। অবশ্য সোমবার রাত থেকে তিনি আর জাতীয় ফুটবল দলের অংশ হয়ে নেই। কারণ নতুন কোচ ফাবিও লোপেজ এসে তাকে ছেটে ফেলেছেন। নাম নেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ২৯ জনের স্কোয়াডে।
অবশ্য শুধু জাহিদই না ইতালিয়ান লোপেজের তালিকায় নেই বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ফুটবলের আরেক উজ্জ্বল তারকা জাহিদ হাসান এমিলির নামও। জাহিদ-এমিলি দুজনই এখন ব্যাস্ত চট্টগ্রামে চলমান শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে।
এমিলি চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক আর জাহিদ এই দলের অন্যতম ভরসার পাত্র। দলকে ফাইনালে উঠানোর পেছনে জাহিদের রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। মঙ্গলবার রাতে আফগানিস্তানের স্পিনগর বাজান ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শুক্রবারের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে জাহিদের দল চট্টগ্রাম আবাহনী।
ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্ট ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে কোচ শফিকুল হক মানিকের সঙ্গে এসেছিলেন জাহিদ হোসেনও। তাই যথারীতি হাসাহাসিও হয়েছে ব্যাপক পরিমাণে। এক সাংবাদিক শুরুতেই প্রশ্ন করে বসলেন, লোপেজের দলে তার নাম নেই কেনো। প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই দুই হাত নেড়ে জাহিদ বললেন, এসব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নয়। এটা পরে হবে, আগে টুর্নামেন্ট শেষ হউক।
এবার আসলো টুর্নামেন্ট নিয়ে প্রশ্ন। ফাইনালে আরেক প্রতিপক্ষ হিসাবে কাকে চান, মোহামেডান না ইস্ট বেঙ্গল। জাহিদের সোজা সাপ্টা উত্তর- ইস্ট বেঙ্গলকে চাই আমি। কেনো জানতে চাইলে জাহিদ বললেন তারা শক্তিশালী দল ! জাহিদের বলার ঢং দেখে শুরু হলো হাসির ফোয়ারা।
পরের প্রশ্ন- গত ম্যাচের হাতছাড়া হওয়া জাহিদের ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে। জাহিদ ৩ গোল করে হ্যাটট্রিক করলেও সেদিন পুরস্কার পেয়েছিলেন এলিটা কিংসলে। আর কালকের ম্যাচে কিংসলে ২ গোল করে আবারও ম্যাচসেরা। জাহিদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা আমি ‘সেক্রিফাইস’ করেছি যাতে ওর আরও স্পিড বাড়ে ! ও তো (কিংসলে) আমারই টিমের। আবারও হাসির রোল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের অস্থায়ী প্রেসবক্সে।
জাহিদের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক যোগ করলেন, জাহিদ তো আমাদের সহ-অধিনায়ক, তার একটা দায়িত্ব আছে না ! সবার কাছে ফাইনালে দলের জন্য দোয়া চেয়ে উঠে দাড়ালেন মানিক-জাহিদ। ছুটলেন ড্রেসিংরুমের দিকে। দুজনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পরিস্কার বলে দিচ্ছিলো কতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফাইনালে এখন চট্টগ্রাম আবাহনী।