বছর দুই আগের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতি-রোমাঞ্চ এখনও আলোচনায় আসে ঘুরেফিরে। টাই ম্যাচের পর দুটি সুপার ওভার টক্করেও যখন ফয়সালা হল না ট্রফির, সামনে আসে বাউন্ডারি সংখ্যার হিসাব। নিউজিল্যান্ডের হৃদয় ভেঙে তাতে শিরোপা উল্লাসে মাতে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
ইয়ন মরগানের সেই ইংল্যান্ড এবার মুখোমুখি কেন উইলিয়ামসনের সেই নিউজিল্যান্ডের। এবারও মঞ্চ বিশ্বকাপের। তবে লড়াইটা ফাইনালে ওঠার। আরব আমিরাতে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিতে লড়বে ইংলিশ-কিউইরা।
দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিতে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। তার আগেরদিন আবুধাবিতে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মহারণ। যারা নিজ নিজ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ হওয়ার কল্যাণে মুখোমুখি হচ্ছে আসরের প্রথম সেমিতে।
মরগানের ইংল্যান্ড গ্রুপ-১এ সেরা হয়েছে। ৫ ম্যাচে ৪ জয় সঙ্গী করে। ৮ পয়েন্ট জমানোর পথে অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশের সঙ্গে খেলে সর্বোচ্চ রানরেট ২.৪৬৪ নিয়ে গ্রুপসেরা হয়েছে। এই গ্রুপ থেকে সেমিতে ওঠা অজিরা ৮ পয়েন্ট জমিয়েও ১.২১৬ রানরেটের কারণে দুইয়ে থেকেছে। ৮ পয়েন্ট তুলেও ০.৭৩৯ রানরেটের কারণে যেজন্য প্রোটিয়ারা সেরা চারে আসতে পারেনি।
গ্রুপ-২এ সেখানে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয় নিউজিল্যান্ড। তাদের রানরেট ১.১৬২। ৫ ম্যাচে তাদেরও ৪ জয়। ১০ পয়েন্টের পাকিস্তান এই গ্রুপের সেরা, ১.৫৮৩ তাদের রানরেট। তারাই কেবল সুপার টুয়েলভ পর্বে সবকটি ম্যাচে জিতেছে।
জয়ের দিক থেকে পাকিস্তান যেমন চলতি বিশ্বকাপে শীর্ষে। দুই গ্রুপ মিলিয়েই। রানরেটের দিক থেকে তেমন শীর্ষে ইংল্যান্ড। সব দলকে হিসাবে নিয়েই। সবার আগের ফাইনালের টিকেট কাটার স্বপ্নে ঝড় তোলা রানেই বাজিমাত করতে চায় ইংলিশরা। রানে হোক বা উইকেটে, সামনে রানরেটের হিসাব কোনো কাজে লাগবে না। তবে টুয়েলভ পর্বে যেমন উড়ন্ত জয় তোলা সম্ভব হয়েছিল, যেজন্য বেড়েছিল রানরেট, তেমন জয় তুলতে চায় মরগানের দল।
উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডও ছেড়ে কথা বলবে না। লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই ক্ষতের ৮৫০ দিন পেরিয়ে মুখোমুখি আরেকটি বিশ্বকাপে। মনের কোণে কোথাও না কোথাও জবাব দেয়ার হিসাবটা থাকছেই! যদিও অতীত ভেবে বাড়তি চাপ কাঁধে ভর করাতে আগ্রহী নয় কিউইরা।
নিজেদের শেষ পাঁচ টি-টুয়েন্টির চারটিতে জিতেছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড হেরেছে নিজেদের সবশেষ ম্যাচেই, তবে তাদেরও জয় চারটিতে। দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ের সবশেষ ২১ টি-টুয়েন্টিতে কেবল ৭টিতে জিতেছে নিউজিল্যান্ড, বিপরীতে ইংল্যান্ডের জয় ১২টি।
দুদলেই একাধিক খেলোয়াড় আছেন, যিনি-যারা পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের চিত্র। কিউইদের যেমন ওপেনিংয়ে মার্টিন গাপটিল। ইংলিশদের তেমন মঈন আলি, ব্যাটের চেয়ে স্পিনে যিনি চলতি বিশ্বকাপে বাজিমাত করে চলেছেন। মাঠে এ দুই তারকা, নাকি অন্যকেউ আলো কেড়ে বসেন প্রথম সেমিতে, সেটা দেখতে কেবল কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা ক্রিকেটপ্রেমীদের।
ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড মালান, ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি, স্যাম বিলিংস/ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডান, আদিল রশিদ, মার্ক উড।
নিউজিল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: মার্টিন গাপটিল, ড্যারিল মিচেল, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে (উইকেটরক্ষক), গ্লেন ফিলিপস, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, অ্যাডাম মিলনে, টিম সাউদি, ইশ শোধি, ট্রেন্ট বোল্ট।