একাত্তরের ঘাতক বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতের নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ডদেশ কার্যকর করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ফাঁসির মঞ্চের পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাতজন জল্লাদকে।
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসি নিশ্চিত করা জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে ওইসব জল্লাদ প্রস্তুত রয়েছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে চাওয়া প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর থেকেই চলছে ফাঁসির রায় কার্যকর করার উদ্যোগ।
কারাগারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যার পরপরই ফাঁসির মঞ্চে সামিয়ানা টানানো হয়েছে। মঞ্চের আশেপাশে আলোর ব্যবস্থা করার জন্য বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেলের দুইটি এ্যাম্বুলেন্সও।
শনিবার সন্ধ্যার আগে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী, দুই ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের অন্য সদস্যরা দেখা করতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমতি দেয়নি। একইভাবে মুজাহিদের আইনজীবীরা তার সাথে দেখা করতে চান। কিন্তু তাদেরকেও অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বিকাল থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কারাগার এলাকায় প্রচুর পুলিশ-র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। আশেপাশে এলাকার যান চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় কারাগারে যান দুই ম্যজিষ্ট্রেট মুশফিকুর রহমান ও তানভীর আহমেদ। তারা কারাগারের ভেতরে দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্ততি দেখেন। পরে আলাদাভাবে তারা কথা বলেন মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জোট সরকারের মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং ওই সময় মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে।
দুই ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেসময় একাত্তরের আল বদর কমান্ডার মুজাহিদ এবং চট্টগ্রামে গণহত্যা চালানো সাকা চৌধুরী দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুকম্পা চেয়ে আবেদনপত্রে সই করেন। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওই আবেদনপত্র পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তারপর আইন মন্ত্রণালয় ঘুরে সেই আবেদন যায় বঙ্গভবনে। রাত পৌনে ১০টার দিকে আইন সচিব জানান, তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি।