চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ফরহাদ মজহার অপহৃত হননি: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার অপহরণের শিকার হননি। তিনি স্বেচ্ছায় রাজধানীর শ্যামলীর বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ আদায় ও সরকারকে বিব্রত করতে ফরহাদ মজহারের লক্ষ্য ছিল।

তিনি আরও বলেন, এক নারীর সঙ্গে আলোচিত ও সমালোচিত এই লেখকের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে তাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

ফরহাদ মজহার অপহর নাটক সাজিয়ে ছিলেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ধারণা এবং পারিপাশ্বিক অবস্থা দেখে এটি পরিস্কার।

আইজিপি বলেন, গত ৩ জুলাই ভোর ৫ টা ২৯ মিনিট থেকে ফরহাদ মজহার নিখোঁজ রয়েছেন বলে তার স্ত্রী দাবি করেন। কিন্তু তিনি সকাল ৮ টার সময় আদাবর থানায় লোক পাঠান। এর পরপরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং জেলা পুলিশ তাকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তারা বলেছিল একটি মাইক্রোবাসে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই আমরা দেশের সকল হাইওয়েতে চেকপোষ্টে বসিয়ে কমন মাইক্রোবাসগুলো চেক করি। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তারপর সন্ধ্যায় তথ্য পেলাম তিনি খুলনা থেকে ঢাকায় আসছেন বাসে। এরপর তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, তদন্তে আমরা জানতে পারি, ভোর ৫ টা ২৯ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ফরহাদ মাজহার তার নম্বর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে ১০ বার কথা বলেছেন। মজহার সাহেব তার আরেকটি সিম থেকে আরেক জনের সঙ্গে ৬ বার ফোনে কথা বলেন। সেই নম্বর থেকে একটি এসএমএসও আসে তার নম্বরে। এরপর তদন্ত করে দেখি ওই নম্বরটি ভাটারা থানার এক নারীর। তিনি ভাটারা থেকে চট্টগ্রাম চলে যান। যেহেতু ওই নারী এই মাওলার সংশ্লিষ্ট, তাই তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তার সঙ্গে কথা বলে। তিনি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

তদন্তে জানা গেছে, ওই নারী ২০০৭ সালে ফরহাদ মজহারের সহকর্মী ছিলেন। পরে তার চাকরি না থাকলে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। সম্পর্কের কারণে আগে একবার শারিরীক সমস্যায় পড়লে পরে ডাক্তারের ট্রিটমেন্ট নেন তিনি। সম্পর্কের কারণে একই ধরণের সমস্যা আবার হতে পারে। ওই নারী ২ তারিখে তাকে ফোনও দেয়।

কথিত অপহরণের দিন দুপুরে ওই নারী ফোন দিয়ে ফরহাদ মজহারকে বলেন, ‘আপনাকে না কি অপহরণ করা হয়েছে?’ উত্তরে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘না আমার কিছু হয়নি ভালো আছি।’ -পুলিশের কাছে এই ফোন রেকর্ডও আছে বলে জানন আইজিপি।

ওইদিন দুপুরেই ফরহাদ মজহার ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং রকেটের মাধ্যমে ওই নারীতে প্রথমে ১৩ হাজার এবং পরবর্তীতে ২ হাজার টাকা পাঠান। বিকেলের দিকে যখন ফেসবুকসহ দেশের গণমাধ্যমগুলোতে তার অপহরণের বিষয়টি ভাইরাল হয়, তার পরিবার যখন গনমাধ্যমে কথা বলে তখন কিছুটা বিব্রত বোধ করেন ফরহাদ মজহার।

‘সেসময় তিনি তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘এগুলো নিয়ে কথা বলা বন্ধ কর। ওরা বলেছে ছেড়ে দেবে। এটা নিয়ে আর কথা বলো না’। এই ফোনের রেকর্ড পুলিশের কাছে রয়েছে।’

আইজিপি বলেন, পুলিশের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে ৩ জুলাই দুপুর ৪ টা ২১ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬ টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত তিনি নিউ মার্কেটে ছিলেন।

ফরহাদ মজহার কীভাবে খুলনা গেছেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমরা বিষয়টি এপর্যন্ত জানতে পারিনি। আমাদের তদন্ত কর্মকর্তারা তার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কথা বলতে রাজী হননি।

বিস্তারিত দেখুন এনামুল কবীর রূপমের ভিডিও রিপোর্টে: