শুক্রবার ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানার পর থেকে এ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডবে দেশটিতে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। উড়িষ্যা থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বর্তমানে ঝড়টি বাংলাদেশের যশোর-সাতক্ষীরা অঞ্চলে অবস্থান করছে।
ফণী আঘাত হানার আগেই উড়িষ্যা থেকে প্রায় ১১ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় ১৫ হাজার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ২০ হাজার মানুষ শুক্রবার রাত থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত ফণীর আঘাতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঝড়ের প্রকোপে রাস্তাঘাটে বড়বড় গাছপালা ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
মূলত উড়িষ্যাতেই সবচেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিল: শুক্রবার বিকেল ৩টা নাগাদ উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়বে ফণী। কিন্তু তার আগেই সকাল ৯টা নাগাদ ১৯৫ কিলোমিটার বেগে ওড়িশার গোপালপুর এবং পুরীতে আছড়ে পড়ে।
অঞ্চলগুলো এখন বেশিরভাগই পানির নিচে।
ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার গতিবেগে উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়ার পর এক পর্যায়ে দুর্বল হয়ে ফণী ‘অতি শক্তিশালী প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ (extremely severe) থেকে ‘অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়’-এ (very severe) রূপ নিয়ে শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে পশ্চিমবঙ্গের ওপর আছড়ে পড়ে। এর আগেই শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পযন্ত কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে যাওয়ায় শিগগিরই বিমানবন্দর খুলে দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার সকালে এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তিনি জানান, ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারকে সবরকম সহযোগিতা করবে।
Spoke to Odisha CM Naveen Patnaik Ji and discussed the situation prevailing due to Cyclone Fani. Assured continuous support from the Central Government in the wake of the cyclone.
The entire nation stands in solidarity with all those affected by the cyclone in different parts.
— Chowkidar Narendra Modi (@narendramodi) May 4, 2019
‘ভারতের ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোর পাশে পুরো দেশ ও জাতি রয়েছে,’ টুইটে বলেন মোদি।
অন্যদিকে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকায় কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ত্রাণ পাঠাতে চাইলে তা বিনামূল্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এয়ারলাইন কোম্পানিটি।
গত ২০ বছরে এমন ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দেখেনি ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ। এনডিটিভি জানায়, সর্বশেষ ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে সুপার সাইক্লোন টানা ৩০ ঘণ্টা হামলা চালিয়েছিল উড়িষ্যায়। ওই সময় দেশটিতে প্রায় ১০ হাজার প্রাণহানি হয়েছিল ঝড়ের আঘাতে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর আগে ৪৩ বছরের ইতিহাসে এমন তীব্রতার সাইক্লোন এটিই ছিল প্রথম।