আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এর সূচনা হয়েছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই, মহান ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এই আন্দোলন ছিল ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন এবং এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন প্রধানত শিক্ষিত শ্রেণি-ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীরা। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কালক্রমে এক নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্বের উন্মষ ঘটেছিল, এক নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব হয়েছিল। এই ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবির্ভূত হয়েছিলেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল এই বাংলার সব সম্প্রদায়ের জনগণের জাতীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।
শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের নেতত্বে এই অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের মানুষ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-এক অখণ্ড জাতিতে পরিণত হয়েছিল, যেটা আগে কখনো হয়নি। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতত্বে পাকিস্তানি শাসকচক্রের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলের মানুষের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পর্যায়ক্রমে বাঙালিদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তো এই প্রক্রিয়ার অমোঘ পরিণতি। যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ফলে হয়েছিল, তাই সঙ্গত কারণে ১৯৭২ সালে রচিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাংলাদেশের অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়; কিন্তু স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতত্বে যে আওয়ামী লীগ সরকার গঠিত হয়েছিল সে সরকার ছিল দুর্বল সরকার। ক্ষমতায় গিয়ে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ নেতারা দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারেননি।
একটি সুদক্ষ, শক্তিশালী দায়িত্বশীল ও স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন। এই সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট চক্রান্তকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা পরিচালিত এক সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে সামরিক চক্র ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরপর অরাজকতা ও সহিংস ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত সামরিক নেতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তারপর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে অধঃপতনের ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়।
আমাদের স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষার মধ্যে ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে স্বশাসন; স্বশাসনের মধ্য দিয়ে একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের সব মানুষের অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎসা-নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে কারো প্রতি কোনো রকম বৈষম্য করা হবে না। সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের স্বাধীনতার সে আকাঙ্ক্ষা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। ক্ষমতায় যারাই গেছে তারাই গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দিয়ে ক্ষুদ্র দল ও গোষ্ঠী স্বার্থে গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। এতে করে দেশের সব মানুষের জন্য অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎসা-নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যায়নি।
এক শ্রেণির মানুষ ফুলে-ফেঁপে বড়োলোক হয়েছে। সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষুদ্র জাতি-সত্তা ও ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু মানুষেরা চরম বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের জমি-জমা কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার চরম ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়েছে। থানা-পুলিশ-আইন-প্রশাসন কোনো কিছুই তাদের পক্ষে ভূমিকা পালন করেনি।
একাত্তরে কাগজে-কলমে দেশ স্বাধীন হলেও মূলত এদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বৃহৎ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর। ঋণ-সাহয্য-অনুদানের নামে বাংলাদেশকে বিভিন্ন পুঁজিবাদী দেশ ও তাদের স্বার্থরক্ষাকারী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণভাবে গ্রাস করেছে। আইএমএফ-ওয়ার্ল্ডব্যাংক-এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণ হয়। কয়লা-তেল-গ্যাসসহ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর দখল প্রতিষ্ঠার জন্য বৃহত্তর পুঁজিবাদী দেশগুলো বাংলাদেশকে অক্টোপাশের মতো চেপে ধরেছে।
আর ঘুষ-দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত আমাদের সরকারগুলো বিদেশি প্রভুদের কাছে নিজেদের বিবেক ও স্বাধীনতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে দাসত্বকেই অলঙ্কার হিসেবে মেনে নিয়েছে। স্বাধীনতার পর গত সাড়ে চার দশকে এটাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশ আজ বৃহত্তর পুঁজিবাদী দেশগুলোর অবাধ বিচরণভূমিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশের দেউলিয়া রাজনৈতিক শক্তিই তাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। মর্যাদা ও সম্মান নিয়ে, নিজের শক্তি-সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে মাথা তুলে দাঁড়ানোর মতো শক্ত মেরুদণ্ড সম্পন্ন রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলের আজ বড়ই অভাব।
আন্তর্জাতিক পুঁজির পক্ষের শক্তিগুলো চায় বাংলাদেশ একটি ভঙ্গুর বা দুর্বল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হোক। এতে করে বাংলাদেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। পরনির্ভরশীলতা বিস্তৃত হলে বাংলাদেশে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম রাখা সম্ভব হবে। বঙ্গপোসাগর ও বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক লুটেরাদের কাছে বড়োই আকর্ষণীয়। এখানে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা গেলে ভারত-পাকিস্তান-চীনকে শাঁসানো সহজ হবে। আর ১৬ কোটি মানুষের বিশাল শ্রমশক্তিকে ব্যবহার ও বাজার দখলের মাধ্যমে স্বার্থ হাসিলের প্রশ্নটি তো রয়েছেই।
প্রকৃত সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই; কিন্তু সেই গণতন্ত্র হতে হবে নির্ভেজাল গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে ধর্মনিরপেক্ষতা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব মানুষ ধর্মবর্ণ এমনকি ভাষা নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না, বরং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী সব নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করবে, রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে পৃথক রাখতে হবে- এই হলো আধুনিক যুগের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মাপকাঠি। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’-এই হলো ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল কথা। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র জীবন থেকে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
ধর্মকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে এক ধরনের মৌলবাদী সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের গতিপথকে পেছনে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশে শিক্ষা-সংস্কৃতি ধর্মবিশ্বাসের নামে আসলে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ বিকাশের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াতের অবদান প্রধান হলেও আওয়ামী লীগের আপোষকামী ও সুবিধাবাদী নীতিও কম দায়ী নয়। যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় যাবার এবং ক্ষমতায় থাকার মোহ দেশের এ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমাহীন আপোষকামী হিসেবে গড়ে উঠতে ভূমিকা পালন করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের রাজনীতিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাথার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করেছে নিজ নিজ স্বার্থ ও সুবিধা অনুযায়ী। বিএনপির সরাসরি আশ্রয়-প্রশ্রয়ে যে মৌলবাদী চক্র মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তাদের ঘাটাতে সাহস দেখায়নি আওয়ামী লীগও। তারাও মৌলবাদী চক্রের সঙ্গে আপোষ করেছে। মৌলবাদী সংস্কৃতি তারাও আত্মস্থ করেছে। তারাও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য অকাতরে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। মৌলবাদীদের সঙ্গে আপোষ-রফা করে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা, পাঠ্যপুস্তকে মৌলবাদীদের দাবি মেটানো, ধর্মবাদকে বিকশিত ও লালনের সুযোগ করে দেয়া, দলের নেতাকর্মীদের ক্রমশ ধর্মবাদী হয়ে ওঠা-সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেই সমাজে ধর্মীয় বিষবৃক্ষের চাষাবাদ করছে। এর বিষফলও ফলেছে অতিদ্রুতই। পশ্চাদপদ সামাজিক ভূমিতে মৌলবাদী জঙ্গি রাজনীতি সহজেই বিকশিত হচ্ছে। প্রকাশিতও হচ্ছে।
মুখে ভালো ভালো বুলি আওড়ালেও আন্তর্জাতিক চক্রও অবশ্য চায় বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে মৌলবাদ চাষাবাদ হোক। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বা গণতান্ত্রিক চেতনা মৌলবাদ এবং আন্তর্জাতিক লুটেরা গোষ্ঠী উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ মুক্ত হয়ে গড়ে উঠার বা বেড়ে উঠার সুয়োগ পায়। তারা নিজেদের হিস্যা বুঝে নেয়ার জন্যও সোচ্চার হয়। এ ব্যবস্থায় তাই সাধারণ মানুষের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়া সহজ হয় না। নয়া উপনিবেশবাদীরা তাই তলে তলে দুর্বল সমাজ কাঠামো ও অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা অধিকতর শ্রেয় মনে করে।
সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা যদি প্রকট হয়, সরকার যদি লুটেরা শ্রেণির প্রতিভূ হয়, তাহলে আন্তর্জাতিকচক্র সহজেই তাদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে পারে। সে জন্যই বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তর্জাতিক চক্রের এত তৎপরতা ও আগ্রহ। তারা চায় ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে। এ কাজে এদেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো সবসময়ই তারা সহযোগির ভূমিকায় পেয়ে যায়। দুর্বল রাজনৈতিক কাঠামো এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী মানসিকতার কারণে এদেশে শুধু যে মৌলবাদী চক্রেরই বাড়-বাড়ন্ত তাই নয়, ক্ষমতা নিয়ে মারামারি-কাড়াকাড়ির ফাঁক গলিয়ে সেনাবাহিনীও নিয়মিত বিরতিতে রাষ্ট্রক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করে আসছে। তাদের এ অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আরো বেশি দুর্বল করে দিচ্ছে। মৌলবাদী চক্রকে শক্তিশালী হতে সুযোগ করে দিচ্ছে।
অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য নেই। গণতন্ত্রের চিরশত্রু মৌলবাদ ও সামরিকতন্ত্রকে উচ্ছেদ করার ব্যাপারে কোনো প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সংকল্প নেই। এমন মেরুদণ্ডহীন অসার রাজনৈতিক শক্তির কাছে দেশের মানুষ কী আশা করতে পারে? স্বাধীনতার সুফল তো দূরের কথা, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার ব্যাপারেই বা তাদের ওপর কতটা ভরসা রাখা যায়?
রাজনীতিতে যে সুবিধাবাদ, দেশপ্রেমবর্জিত আখের গোছানোর যে প্রবণতা আমাদের দেশে চলছে তারা থেকে উত্তরণ ঘটাতে চাইলে অবশ্যই বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো যে সে পরিবর্তন করবে না তা আমরা স্বাধীনতার ৪৬ বছরে বুঝে ফেলেছি। অশিক্ষিত, কুশিক্ষিত জনগণের অন্ধবিশ্বাস, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সামাজিক কুসংস্কারকে মূলধন করে ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার রাজনীতি কখনোই দেশের কল্যাণ সাধন করতে পারে না-এ সত্য বোঝা এবং বোঝানো এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রয়োজন নতুন চেতনা, নতুন সংগঠন, নতুন কর্মীবাহিনী। অভ্যস্ত স্লোগান, চেনা রাজনীতিকদের বুলি আমাদের কাছে ক্লিশে হয়ে গেছে। এখন বিকল্পের অন্বেষণ করতে হবে।
এই বিকল্প মৌলবাদ নয়, অবশ্যই গণমানুষের পক্ষের দেশপ্রেমিক শক্তির। এইশক্তির সন্ধান করতে হবে। এই শক্তিকে গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্মকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। আপাতত চিন্তার শুদ্ধতা চাই। চাই নতুন আদর্শ ও চেতনা। এই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশে এক নবজাগরণের প্রয়োজন। এ জন্য প্রয়োজন আরেক যুদ্ধের। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আরেক মুক্তিযুদ্ধের জন্য তৈরি করতে হবে। তা না হলে দেশে নির্বাচন হবে, ফি বছর ঘটা করে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে। কিন্তু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)