কুড়িগ্রামে সম্পন্ন হয়েছে সৈয়দ শামসুল হকের দাফন। সব্যসাচী এ লেখকের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জন্মভূমি কুড়িগ্রামের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে।
বুধবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সরকারি কলেজ মাঠ চত্বরেই লেখককে দাফন করা হয়।
এর আগে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে সৈয়দ হকের মরদেহবাহী হেলিকপ্টারটি কলেজ মাঠে অবতরণ করে। পরে নির্ধারিত মঞ্চে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশে তাকে দাফন করা হয়।
এ সময় সাংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, জেলা পরিষদ প্রশাসক মোঃ জাফর আলী, পৌর মেয়র আব্দুল জলিলসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরেই ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে সৈয়দ হকের মরদেহ গুলশানে তার বাসভবনে নেওয়া হয়। পরে মরদেহের গোসল শেষে আবারো হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।
বুধবার সকাল ১০টায় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে সৈয়দ হকের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় নামাজে জানাযা সকাল পৌনে ১১টায় বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সব্যসাচী লেখকের মরদেহ সকাল ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আরেকটি জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সৈয়দ হকের মরদেহ হেলিকপ্টারে কুড়িগ্রামে নেওয়া হয়।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের পাশে ধান ক্ষেতসংলগ্ন জমিতে কবরের ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন কবি। সেখানে তিন শতক জমি মাটি ভরাট করে তাকে দাফন দেয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।
লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে চার মাস চিকিৎসার পর ২ সেপ্টেম্বর সৈয়দ শামসুল হক দেশে ফেরেন। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে তিনি লন্ডনে যান। সেখানে পরীক্ষার পর তার ক্যানসার ধরা পড়ে। দেশে ফেরার পর তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে লেখক দুই সন্তানের জনক। জীবনসঙ্গী মনোরোগের চিকিৎসক ও লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
লেখকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ উপন্যাস অবলম্বনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘গেরিলা’ সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল।