শিক্ষার্থী ভর্তি হার, শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামোগত অবস্থানসহ প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সব সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলায় প্রত্যাশামতো দক্ষতা অর্জন না হলেও ইংরেজি ও গণিতে দক্ষতা বেড়েছে অনেক।
প্রাথমিক শিক্ষার এই অগ্রগতিকে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছেন মন্ত্রী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তিন উপদেষ্টা।
২০১৩ সালেও প্রাথমিকে ভর্তির হার ছিল ৯৫ শতাংশ। এখন তা বেড়ে ৯৮ শতাংশের ওপরে। ওই বছর একজন শিক্ষক যেখানে পড়াতেন ৬০ জন শিক্ষার্থীকে এখন তা কমে হয়েছে ৪৫ জন-এ। গণসাক্ষরতা অভিযানের এডুকেশন ওয়াচ জরিপে উঠে এসেছে সাফল্যের তথ্য।
জরিপের ফলাফল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এমন অর্জন অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা এগিয়ে গেছে এবং ধাপে ধাপে এর উন্নতি হচ্ছে, এ কথাটাই জরিপে প্রকারান্তরে স্বীকার করা হয়েছে। তবে বলা হয়েছে, এখানে আরো অনেক কিছু করার আছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পৃথিবীর কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। তারপরও আমাদের দেশে বাবা-মায়েরা তাদের মেয়েকে শিক্ষার পেছনে, চাকুরির পেছনে এগিয়ে দিচ্ছেন। লাদেন, ঝাউখালী, আইএস একে থামাতে পারবে না। কেউ একে থামাতে পারবে না। ওরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ তরতর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক তিন উপদেষ্টা।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষায় অগ্রগতি প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ইংরেজি-অংকে অগ্রগতি হচ্ছে না – এসব নিয়ে অনেক চেঁচামেচি হয়েছে। এর ফলে গণিত অলিম্পিয়াড এবং ইংলিশ ইন স্কুল’র মতো অনেক ধরণের সামাজিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ইংরেজি আর অংকে দুর্বলতার যে বদনাম ছিলো তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে।
‘আমরা দু’টো কারণে আনন্দিত ও বিস্মিত,’ বলেন সাবেক উপদেষ্টা, ‘একটি কারণ হলো, বাংলাদেশ আসলেই এগোচ্ছে। আমরা এতোকিছু বলি, কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার দিক থেকে, অবকাঠামোগত দিক থেকে, মানুষের চাহিদার দিক থেকে, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি – সবকিছুর দিক থেকে আমরা একটি ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করেছি।’
এডুকেশন ওয়াচ জরিপে বলা হয়েছে, ৭৩ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নত অবকাঠামো রয়েছে। শ্রেণীকক্ষের স্বল্পতাও আগের তুলনায় কমেছে অনেক। সরকারি স্কুলে প্রতিবন্ধী শিশু ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, নতুন ভবনগুলোও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের কথা মাথায় রেখে।