পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পাচারকারী সন্দেহে আটক আরিয়ান আরিফসহ ‘মজার ইসকুল’ এর ৪ স্বেচ্ছাসেবককে জামিন দেয়নি আদালত। আদালত শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছে। মামলার বাদীর দাবি, সে শুধু হারিয়ে যাওয়া বাচ্চা উদ্ধারে এলাকাবাসী ও পুলিশের সাহায্য নিয়েছে, মামলা করেনি। কিন্ত পুলিশ বলছে, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা করা হয়।
আটককৃতরা হলো আরিফুর রহমান, হাসিবুল ইসলাম সবুজ, জাকিয়া সুলতানা ও ফিরোজ আলম ওরফে শুভ। তাদের ৪ জনকে গ্রেফতারের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার যৌক্তিকতা নিয়েও।
মামলার বাদি মনির হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ছয় মাস ধরে বাচ্চার খোঁজ পাচ্ছিলাম না। তাকে আটকে রাখা হয়েছে খবর পেয়ে তাকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে তারা বলে, তিন বছরের আগে অভিভাবকদের কাছে ফিরে যেতে পারবে না।
মনির আরো বলেন, এরপর বাচ্চার বিষয়টি এলাকার লোকদের জানালে তারা উদ্ধার করে। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে।
থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা করেছেন কিনা এ প্রশ্নের জবাবে মনির হোসেন বলেন, আমি বাচ্চা (ভাতিজা) ফিরে পাওয়ার পর কী হয়েছে কিছুই জানি না, বাকিটা পুলিশই বলতে পারবে।
মনির তার ভাতিজা শিশু মিজানকে তার সাথেই রেখেছেন। আর বাকি ৯ শিশুকে টঙ্গীর শেল্টার হোমে রাখা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়ারত হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সে (মনির) তো অভিযোগ দিয়েছে, আমরা তার ভাতিজাকে উদ্ধার করেছি। মামলা হয়েছে তার পরে।
আরিয়ানদের সংগঠন অদম্য বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবক মো শাকিল আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা আইনজীবীর কাছে আমাদের সব কর্মকাণ্ডের প্রমাণপত্র দিয়েছি। রোববার সেগুলো আদালতে হাজির করা হবে। ওইদিন মামলার বাদী মনির হোসেনকে এবং বাকি ৯ শিশুকেও হাজির করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া আরিয়ানসহ ৪জন মূলত ‘অদম্য বাংলাদেশ’, ‘মজার ইসকুল’ এবং ‘পথ শিশু ও আমরা কতিপয়’এর উদ্যোক্তা ও সেচ্ছাসেবক। তারা বিভিন্ন সময় ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পথ শিশুদের সংগ্রহ করতো।
পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন জুম বাংলাদেশের এসটি শাহীন প্রধান বলেন, আমরা কাজ করতে গিয়ে অনেকবার দেখেছি তারা পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করে। তাদের কাজের মধ্যে কোন অসংগতি থাকার কথা নয়।
গ্রেফতারকৃত আরিয়ান আরিফদের আগারগাঁ, শাহাবাগ, কমলাপুর এবং সদরঘাট এ বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ে পথশিশুদের সপ্তাহে তিন-চারদিন পথশিশুদের ক্লাস নিতেন। এছাড়া বনশ্রীতে তাদের একটি শেলটার হোম আছে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর রামপুরার সি-ব্লকের ১০ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বাসার ৬ তলায় ‘অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামক একটি এনজিও থেকে শিশু পাচারকারী সন্দেহে ওই ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় ওই ভবন থেকে ১০টি শিশুকে উদ্ধার করা হয়।