চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রশ্নপত্রে ত্রুটি: অবহেলার ভয়ংকর এক দৃষ্টান্ত

এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়

‘‘পরীক্ষার আগে কোনো ধরনের অনৈতিক পথের খোঁজ করবেন না। শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিলেই ভালো ফলাফল করবে।’’ এবারের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির এমন আহ্বানের মাধ্যমে।

এ ক্ষেত্রে তিনি নিঃসন্দেহে সফল। কেননা এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য বছরের মতো প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো অভিযোগ বা গুজব, কোনোটাই উঠেনি। তবে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা, প্রশ্নপত্রে ত্রুটির মতো ঘটনা পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের বড় ধরনের গাফিলতির প্রমাণ দেয়। আর তাদের ক্ষমার অযোগ্য ভুলের কারণে দায় বহন করতে হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে।

এরই মধ্যে আমরা জেনেছি, পরীক্ষার প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮টি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সেসব কেন্দ্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয় পুরোনো পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য করা প্রশ্নপত্র দিয়ে। বিষয়টি ধরা পড়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কিন্তু তার আগেই ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সেইসব পরীক্ষার্থীর খাতা আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

আজ মঙ্গলবার যশোর বোর্ডে ঘটলো আরেক ঘটনা, সেখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের প্রশ্নপত্রে ত্রুটি পাওয়া যায়। এই কারণে পরীক্ষাই বাতিল করা হয়। শুধু তাই নয়, সেখানে আগামীকালকের ক্যারিয়ার শিক্ষা পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলোর মতো যথারীতি এই দুই ক্ষেত্রেও একে অন্যের প্রতি দায় চাপানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কেউ বলছে, ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কেন্দ্র সচিব দায়ী। কেউ বলছে, বিজি প্রেস দায়ী। আবার কেউ বলছে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দায়ী। দায় যারই হোক না কেন; মূলত তার শিকার শিক্ষার্থীরা। যারা গত দুই বছর ধরে চূড়ান্ত এ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে। এই ঘটনাগুলো তাদের সেই প্রস্তুতিতে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে।

আমরা জানি, প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য এত বড় আয়োজন বেশ কঠিন ও কষ্টসাধ্য। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ভুল কেউ না কেউ করেছে। সেটা তদন্ত করে পাওয়া যাবে। কিন্তু তার আগে নিশ্চিত করতে হবে, এমন ভুল যেন আর বাকী পরীক্ষাগুলোর ক্ষেত্রে না ঘটে।