যেসব তরুণ জঙ্গি কিংবা উগ্রবাদী হয়েছে তাদের বেশিরভাগই জঙ্গিবাদে প্রভাবিত হয়েছে অনলাইনে। প্রযুক্তিতে দক্ষ তরুণদেরকে দলে টানতে তৎপর জঙ্গি গোষ্ঠী। তাই প্রযুক্তিযুগের নতুন প্রজন্মকে আরও সচেতন হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিৎ। এজন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে শিশু-কিশোরদের অভিভাবকের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
কোনো রকম সাইবার বুলিং (অশোভন,অশালীন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য) , হেট স্পিচ (ঘৃণা ছড়ানো বাক্য), উস্কানি এবং ব্যক্তি মর্যাদার ক্ষতি করা সাইবার অপরাধের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
বুধবার (৮ মার্চ) রাজধানীর খিলক্ষেতে হোটেল লা মেরিডিয়ানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ফোকাসিং অন সাইবার ক্রাইম সেফ ইন্টারনেট অ্যান্ড ব্রডব্র্যান্ড’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে আসা শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশে সাইবার অপরাধের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তারানা হালিম জানান, ৪৯ শতাংশ স্কুল শিক্ষার্থীরা এখন হয় নিজেরা সাইবার বুলিং করছে কিংবা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৭৩ শতাংশ তরুণী বিভিন্ন ধরণের সাইবার ক্রাইমের শিকার। অথচ অপরাধের বিচার চেয়ে অভিযোগ করাদের হার মাত্র ২৩ শতাংশ।’
এই বাস্তবতায় স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোরদের সতর্ক করে তিনি বলেন,‘অনির্ভরযোগ্য সাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া ,ওয়েব ক্যামের যথেচ্ছ ব্যবহার, অশোভন ছবি পোস্ট ও শেয়ার, যত্রতত্র উন্মুক্ত ওয়াই-ফাইয়ে সংযুক্ত হওয়া যাবে না।’
এজন্য তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় অভিভাবকের নির্দেশনা মেনে চলার এবং অভিভাবকদের এ যুগের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নিজের সন্তানের উদাহরণ টেনে স্কুল পড়ুয়াদের ইন্টারনেট প্রীতি তুলে ধরেন তারানা হালিম। এব্যাপারে অভিভাবকের সঙ্গে বোঝাপড়াকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন,‘অনলাইনের মাধ্যমে কোনো সমস্যার শিকার হলে সবার আগে অভিভাবককে জানাও। এজন্য অভিভাবকদের হতে হবে বন্ধুর মতো। এতেও সমস্যা সমাধান না হলে পুলিশকে জানাও।’
সাইবার অপরাধের শিকার হলে অপরাধীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি),ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) সমন্বিত পদক্ষেপ গস্খহণ করবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
দেশে প্রথমবারের মতো সাইবার অপরাধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালার শেষ দিনের শেষ সেশনে রাজধানীর কয়েকটি স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে ফেসবুক, ইউটিউব, ভিপিএন, গেমিংসহ সাইবার জগতের নানা প্রান্তে তাদের বিচরণ ও সমস্যাগুলো তুলে ধরে তারা। তাদের প্রশ্ন এবং প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহের প্রকাশ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন কমনওয়েলথ টেলিকমিউনিকেশন অর্গানাইজেশনের মহাসচিব শোলা টেনলরসহ অন্যান্য আলোচকরা।