চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

প্রফেসর সালামের অভিনব ছাদকৃষি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একুয়াকালচার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুস সালাম ২০১০-১১ সালে
তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবনের ছাদে গড়ে তোলেন ব্যাগ গার্ডেন। সেসময়ের
প্রেক্ষাপটে এটি ছিল এদেশে এক নতুন উদ্যোগ।

যেখানে আবাদি জমির সংকট, বা
আবাদি জমি লবণাক্ত সে অঞ্চলের জন্য এই ব্যাগ গার্ডেন ছিল দারুণ কার্যকর এক
কৃষি প্রযুক্তি। তার মাধ্যমে এই প্রযুক্তি ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

গমের স্পাউট থেকে পুষ্টিকর দুধের মতো উপাদানের সন্ধান দেন তিনি। এটিও বেশ সাড়া জাগায়। অবিরাম নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে মেতে থাকা প্রফেসর সালাম কয়েক বছর ধরে তার ছাদে গড়ে তুলেছেন সফল এক সমন্বিত কৃষি কার্যক্রম। বলা যায়, স্বয়ংক্রিয় একটি কৃষি ব্যবস্থা। এখানে প্রফেসর সালাম দিনের পর দিন গবেষণা করে গড়ে তুলেছেন মাছ ও ফল-ফসলের এক দারুণ খাদ্যশৃংখল।

ছাদটি খুব বড় নয়, কিন্তু এখানে কোনো গাছের রোগ ও পোকার আক্রমণের তেমন কোনো সুযোগ নেই, কারণ, এখানে মাটির ব্যবহার হচ্ছে না। এতে মাটির জীবানুগুলো এখানে ফসলে ছড়াতে পারছে না। ব্যবহার হচ্ছে কোকো ডাস্ট। কোনো গাছেই মরা, রোদে ঝলসে যাওয়া বা ছত্রাকে আক্রান্ত কোনো পাতা নেই। গাছগুলি একেবারে তরতাজা। এখানে মাটি ও পানিতে গাছবান্ধব অনুজীবের পরিমাণ বাড়াতে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।

পুরোপুরি রাসায়নিকমুক্ত ও জীব বৈচিত্র বান্ধব সমন্বিত এই ছাদকৃষি বহুমুখি উৎপাদনের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। এছাড়া অবাক করে ছাদের এই ছোট্ট পরিসরে একটি ড্রামে পাঙ্গাস চাষের সফল কার্যক্রমে।

সারাক্ষণ পানি থেকে মাটি ও ফসলের খাদ্য তৈরির এই কার্যক্রমটি চলছে চালু এক যন্ত্রের মতো। এ যেন জীবন্ত মাছ ও গাছ গাছালির এক কারখানা।

এই বাগানের বেশি উৎপাদন প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরো কিছু কৌশল আমাদের সামনে তুলে ধরলেন প্রফেসর সালাম। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা হলো। তা হচ্ছে, ছাদের ওপর এই পরিমাণ ভার চাপানোর ঝুঁকি সম্পর্কে। প্রফেসর আব্দুস সালাম সম্পূর্ন নিজের তাগিদ থেকেই গড়ে তুলেছেন এই বাগান।

এই ভবনের অন্যান্য অধিবাসীদের মধ্যে ছাদকৃষির সবজি বিতরণও করেন তিনি। বাসার ভেতরেও চারদিকে কৃষির আয়োজন। অবশ্য এগুলো দেখাশোনা করেন প্রফেসর সালামের স্ত্রী বিলকিস আক্তার। চারদিকে এই কৃষির আয়োজন আছে বলে বাসায় প্রতিবেলায় তারা গ্রহণ করেন একেবারে সজিব সবজি, সালাদ ও অন্যান্য শাকপাতার স্বাদ। আমরাও বঞ্চিত হইনি সেই স্বাদ থেকে।