চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রতিবন্ধীরা প্রতিভার সাক্ষর রাখছে, দেশের জন্য স্বর্ণ নিয়ে আসছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে প্রতিভার সাক্ষর রাখতে পারছে এবং তারা বিশ্বের বিভিন্ন খেলাধূলায় দেশের জন্য স্বর্ণ জয় করার মতো যোগ্যতা অর্জনে প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একাদশ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোররা স্পেশাল অলিম্পিকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের জন্য প্রতি বছর স্বর্ণ জয় করে নিয়ে আসে, যা আমাদের সুস্থ প্রতিযোগীরা এখনো পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা ক্রিকেট থেকে শুরু করে নানারকম খেলাধুলায় পারদর্শী। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা পছন্দের খেলায় দারুণ প্রতিভার সাক্ষর রাখতে পারে। এজন্যই তাদেরকে সবরকম সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী জানান, চিকিৎসা সেবা ছাড়াও অন্যান্য সব ধরণের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুকিশোরদের জন্য। এছাড়াও সাভারে বারো একর জমিতে ইতোমধ্যে ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রিড়া কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে, যেখানে তাদের খেলাধুলার বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-অটিজম
প্রতিবন্ধী শিশুদের সাংস্কৃতিক আয়োজন

শুধু তাই নয়, জাতীয় সংসদের পাশেই একটি জায়গায় প্রতিবন্ধীদের খেলা প্র্যাকটিসের জন্য বিশেষ জায়গা হিসেবে তৈরি করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুস্থ ছেলেমেয়েদের সঙ্গেও তারা মিশে খেলবে। আবার তাদের জন্য যেন বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা থাকে সেটাও আমরা করব।’

খেলাধুলা ছাড়াও সরকারি চাকুরি এবং বিসিএসে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা বরাদ্দ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকুরিতেও তাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি চাই আমাদের দেশের সুস্থ মানুষদের যেমন আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি, প্রতিবন্ধী, বিশেষ করে অটিজমের শিকারদেরও যেন সেভাবে সবরকম সুযোগ সুবিধা দিতে পারি।’

অটিজম দিবসে এক শিশুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এক্ষেত্রে সমাজকে আরও সচেতন হতে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এটা তো তাদের জন্মের দোষ না। আল্লাহ তো মানুষকে বিভিন্নভাবে সৃষ্টি করেন। কাজেই তাদেরকে অবহেলার চোখে দেখা ঠিক না। চাই সমাজের সচেতনতা।’

প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের প্রতি সমাজকে আরও সংবেদনশীল ও সহানুভূতিশীল হয়ে আদর-ভালোবাসা দিয়ে কাছে টেনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে অটিস্টিক শিশুদের লুকিয়ে রাখা হতো। সেই লুকানোর মানসিকতাটা এখন আর নেই। শুধু আমাদের দেশে না, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এ ব্যাপারে এখন সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। অটিস্টিক শিশুদের সমাজে মূলধারায় আনতে প্রয়োজন ছোটবেলা থেকেই উপযুক্ত সুরক্ষা ও প্রশিক্ষণ। এক্ষেত্রে শিশুকাল থেকেই প্রতিবন্ধীত্ব বা অটিজমের লক্ষণের ব্যাপারে পরিবারকে সচেতন থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-অটিজম
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর শিশুদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে। কিন্তু তাদের জন্য এমন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে যেন তারা সাধারণ ছেলেমেয়েদের সাথে বসে পড়াশোনা করতে পারে।

অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ শেষে মঞ্চ থেকে নেমে প্রতিবন্ধী শিশুকিশোরদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় তিনি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বন্ধুদের কাছ থেকে নিজেদের তৈরি নানারকম শিল্পকর্ম ও চিঠি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন। এরপর দ্বিতীয় অংশে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।