জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সবক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশন জট নিরসনে শিক্ষকদের অবদান এবং তাদের উন্নয়ন নিয়ে কিছু না বলায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকসুদ কামাল।
বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দোলন শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক মাকসুদ কামাল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এই ভাষণে সরকারি কর্মকর্তাদের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরলেও প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কোনো আশার আলো দেখাননি’।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী গণকর্মচারিদের বেতন দ্বিগুণেরও বেশি করার কথা জানালেও এ ইস্যুতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি নিয়ে কথা বলেননি। এটাই স্বাভাবিক উল্লেখ করে মাকসুদ কামাল বলেন,‘ জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জনগণের সামনে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি প্রসঙ্গ না আসাটাই স্বাভাবিক’।
তবে দেশের শিক্ষাখাতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বড় অর্জন ভাষণে উল্লেখ না থাকায় হতাশা জানিয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন,‘ গত ৭ বছরে শিক্ষকদের নিরলস চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট কমে এসেছে। হরতাল-অবরোধে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে গেছি আমরা। অথচ আজ দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় কর্মবিরতি পালন করছি’।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন,‘অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমালোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবদান খাটো করে দেখানোর চেষ্টা দেখা যায় ,অর্জনের স্বীকৃতিও মেলে না। উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণাসহ নানাকাজে সরকার এগিয়ে আসে। অথচ দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খুব অপ্রতুল বরাদ্দ পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানেও গবেষণায় বরাদ্দ বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট বাজেটের মাত্র ১শতাংশ।’
‘এছাড়া আমাদের পদোন্নতিও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার। অন্যান্য নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ৫০ শতাংশই অধ্যাপক সেখানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই হার ৩০ শতাংশের কম।’
এতোসব হতাশার পরও চলমান সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ‘যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় আছেন তারা আমাদের অর্জনগুলো তুলে ধরলে তরুণরা উদ্বুদ্ধ হবে। মহান পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে স্বীকৃতি দিতে বৈষম্যহীণ আচরণ কাম্য। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ একসঙ্গে মিলে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে’।