চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘প্রথম সংবিধান হাতে পেয়ে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত খুশি হন’

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত হওয়ার পর সংবিধানের প্রথম যে হাতে লেখা কপিটি তৈরি করা হয় সেটি এখন রক্ষিত আছে জাতীয় জাদুঘরে।

প্রথম সেই সংবিধানের অঙ্কনের সাথে যুক্ত ছিলেন চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। তা নিয়ে গুচ্ছগুচ্ছ স্মৃতিকথার শুরুতেই তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ৪ নভেম্বর একটি বিশেষ দিন। মনে পড়ে ১৯৭২ সালের সেই সময়ের কথা।

“প্রথম সংবিধানটির  অঙ্গসজ্জা দায়িত্বে ছিলেন হাশেম খান। অঙ্কনে ছিলাম আমি এবং জুনাবুল ইসলাম, আবুল বারাক আলভী। আর লিপিকার ছিলেন এ কে এম আব্দুর রউফ। চামড়ার কাজটি করেন সৈয়দ শাহ শফি। আমাদের এ কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন “

সেই দিনটির কথা স্মরণ করে সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের তত্ত্বাবধানে হাশেম খানের দায়িত্বে আমরা সংবিধানের অঙ্কনের কাজটি করি। এক সময় সংবিধানের  প্রতিটি পাতায় পাতায় অঙ্কন ফুটে উঠে। নকশি কাঁথা, মাচা, নৌকাসহ লোকশিল্পের বিভিন্ন নকশায় সংবিধানের পাতায় পাতায় দৃশ্যমান হয়।

“সম্পূর্ণ কাজটি শেষ হওয়ার পর এই সংবিধানসহ আমাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধুর কাছে নিয়ে যান ড. কামাল হোসেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর হাতে সংবিধানটি তুলে দিলে  বঙ্গবন্ধু  অত্যন্ত খুশি হন। একের পর এক পাতা উল্টিয়ে দেখতে থাকেন। আমাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সেই সংবিধানটি পরে জাদুঘরে রাখা হয়। তবে বাংলাদেশ সরকারী মুদ্রণালয়ে মুদ্রণযন্ত্রে ওটার অল্প কিছু কপি তখন করা হয়।”

সমরজিৎ রায় চৌধুরীর কথার সূত্র ধরে জাতীয়ে জাদুঘরে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় প্রথম সংবিধান। জাতীয় জাদুঘরের ৪০ নং গ্যালারীতে রাখা আছে সংবিধানের প্রচ্ছদসহ প্রথম দিকের কয়েকটি পৃষ্ঠা।

সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মো. শরীয়তউল্লাহ সরদার জানান, জাদুঘরে আসা দর্শনার্থীরা এই  গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান দেখতে আসে।

“অনেকে এই গ্যালারীর সামনে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে দেশের প্রথম সংবিধান কোথায় রাখা আছে? আমি তখন দেখিয়ে দেই যে গ্যালারীর মাঝের দিকটায় কাচ দিয়ে ঘেরা আছে আমাদের প্রথম হাতে লেখা সংবিধানটি।”

শরীয়তউল্লাহ সরদার আরো জানান, এই সংবিধানটি বাংলাদেশ সরকারী মুদ্রণালয়ে যে মুদ্রণযন্ত্রে মুদ্রিত হয় সেটি জাদুঘর ভবনের ঢোকার সময় বাইরে ডান পাশে কাচ দিয়ে ঘেরা একটি ঘরে রাখা আছে।