দীর্ঘ চার বছর পর মা-ছেলের দেখা। লন্ডনে পৌঁছার পর এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে ঢোকার পর ছেলেকে দেখেই কেঁদে ফেলেন খালেদা জিয়া। জড়িয়ে ধরেন ছেলেকে। বেশ কিছুক্ষণ মা ও ছেলে এক অন্যকে ধরে কাঁদতে থাকেন। তখন খালেদা জিয়াকে ‘সন্ত্রাসের নেত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করে বিমানবন্দরে মানবন্ধন করেন প্রবাসীদের একটি অংশ।
বুধবার লন্ডন সময় সকাল সোয়া ৭টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছেলেসহ দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
পরে খালেদা জিয়াকে একটি কালো রঙের গাড়িতে ড্রাইভ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান তার বড় ছেলে।
ব্যক্তিগত সফরে বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনের একটি হাসপাতালে চোখ এবং পায়ের চিকিৎসা করাবেন। ছেলে ছাড়াও পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান এবং নাতনি জাইমা রহমানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাবেন খালেদা জিয়া।
সর্বশেষ ২০১১ সালে লন্ডন সফরের সময় তাদের মধ্যে দেখা হয়েছিলো।
তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই কন্যা জাফিয়া এবং জাহিয়া রহমান। এখন থেকে তারাও লন্ডন থাকবেন বলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
‘এ কারণেই এবার তারা একসঙ্গে ঈদ করবেন,’ বলে খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
তবে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের শুরুতেই কাছাকাছি এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছার আগেই আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে অবস্থান গ্রহণ করেন।
অনেক প্রবাসীও যোগ দেন তাদের সঙ্গে।
হিথ্রো বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে ‘গণহত্যাকারী খালেদা জিয়ার বিচার চাই’ লেখা পোস্টার দেখা যায়।
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন নাশকতামূলক ছবি সম্বলিত পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নেতা কর্মীদের।
“সন্ত্রাসীদের না বলুন” হ্যাশট্যাগ সম্বলিত পোস্টার বহন করেন তারা। তবে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে দুই সপ্তাহের জন্য ব্যক্তিগত সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।
চোখ ও পায়ের চিকিৎসা এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতেই এই সফর বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ব্যক্তিগত সফর শেষে আগামী ১ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।