প্যারিসে পুলিশের গুলিতে নিহত চীনা নাগরিক লিও শাওয়ের পরিবার স্থানীয় চীনা অধিবাসীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ চীনা অভিবাসীদের সাথে সোমবার পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে তিনজন পুলিশ আহত হন। মঙ্গলবার রাতেও প্যারিসে তারা বিক্ষোভ করে।
সন্দেহজনক ঘরোয়া বিবাদ মেটাতে গিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। লিও পুলিশের উপর ধারালো বস্তু দিয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিলো বলেও অভিযোগ ফরাসি পুলিশের। তবে নিহত চীনা পরিবার এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সেই সময় ডিনারের জন্য মাছ প্রস্তুত করছিলো বলে লিওয়ের হাতে কাচি ছিলো।
এরই মধ্যে চীন তার নাগরিকদের সুরক্ষা প্রদানের আহ্বান জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা, আইনগত অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার নিশ্চয়তা চেয়েছে বেইজিং। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে চীনা নাগরিকদের প্রতিক্রিয়াকে যৌক্তিকভাবে দেখার আহ্বানও জানিয়েছে তারা ফ্রান্সের কাছে।
বুধবার নিহত লিওয়ের পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে আইনজীবী ফ্র্যানকোইস ওরমিলিন সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমরা জানি এই ঘটনা কিছু বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে শান্তির আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশের বক্তব্যের বিরোধীতা করে আইনজীবী ওরমিলিন বলেন, তিনি (লিও শাও) হামলা বা পুলিশের দিকে ছুটে যাননি। তার মৃত্যুর সময়কার বর্ণনাও ‘অত্যন্ত অস্পষ্ট’ করে রাখা হয়েছে।
লিওয়ের এক মেয়ে সেই সময় অ্যাপার্টমেন্টে উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশ না করে তিনি এএফপিকে ঘটনার বর্ণনা দেন। বলেন, “তারা (পুলিশ) আমাদের দরজায় অবিরত আঘাত করা শুরু করলে আমরা অপরিচিত কিছু শব্দ শুনি। তখন চরম আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমার বাবা দরজা আটকে রাখতে চেষ্টা করলেও হঠাৎ করেই তা খুলে যায়। তখনই একটি গুলি করা হয়। এসবই হয় কয়েক মুহুর্তে।”
ফরাসি গণমাধ্যমের সাথেও নিহতের এই কন্যা কথা বলেছিলেন। তাদের তিনি জানিয়েছিলেন, দরজার পিপহোল দিয়ে তাকিয়ে তিনি দরজার বাইরে দাড়ানো ব্যক্তিদের পুলিশের কর্মকর্তা বলে বুঝতে পারেননি, যেহেতু তারা পুলিশের পোশাকে ছিলেন না।