অফশোর ব্যবসায়িক বিনিয়োগের ফাঁস হওয়া নতুন নথি প্যারাডাইস পেপারসে এবার পাওয়া গেল ১০ বাংলাদেশি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। বাংলাদেশি ১০ ব্যক্তির মধ্যে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নামও রয়েছে।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) এই গোপন সম্পদ ও মালিকানার তথ্য অনুসন্ধান ও প্রকাশের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই সংগঠনেরই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে দেশের ভিত্তিতে ভাগ করে পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন সময় গোপন সম্পদের তথ্য পাঁস হওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম।
সেই নামের তালিকায় সম্প্রতি প্যারাডাইস পেপারসে থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এবং তাদের অফশোর গোপন ব্যবসার সংক্ষিপ্ত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। শেষ নামের ক্রমানুসারে তালিকাটি এরকম:
- নাসরিন ফাতেমা আউয়াল
- তাবিথ মো. আউয়াল
- তাফসির মোহাম্মদ আউয়াল
- ফয়সাল চৌধুরী
- আবদুল আউয়াল মিন্টু
- ফরিদা ওয়াই মোগল
- শহীদ উল্লাহ
- তাজওয়ার মো. আউয়ালের অভিভাবক হিসেবে আবদুল আউয়াল মিন্টু
- সামির আহমাদ
- তাজওয়ার মোহাম্মদ আউয়াল
আইসিআইজে’র তালিকায় দেয়া প্যারাডাইস পেপারসে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্রামার অ্যান্ড পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
প্যারাডাইস পেপারস বিশ্বের ২৫ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক লেনদেন ও মালিকানা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যভাণ্ডার বা ডাটাবেজ, যে প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক পৃথিবীর ১৮০টি দেশের ধনী, সুপরিচিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
১ কোটি ৩৪ লাখ গোপন নথির সমন্বয়ে গঠিত এই ডাটাবেসে রয়েছে ১৪শ’ গিগাবাইটেরও বেশি ডাটা। নথিগুলোর প্রায় ৬৮ লাখ এসেছে অফশোর আইনি সেবা সংস্থা অ্যাপলবাই এবং কর্পোরেট সেবা সংস্থা এস্টেরা থেকে। ২০১৬ সালে এস্টেরা আলাদা হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান দু’টি একসঙ্গে অ্যাপলবাই নামে কর্মকাণ্ড চালাত।
আরও ৬০ লাখ নথি প্রায় ১৯টি আদালতের কর্পোরেট রেজিস্ট্রি থেকে বের করা। আদালতগুলোর বেশিরভাগই ক্যারিবীয় অঞ্চলের। বাকি অল্প কিছু নথি পাওয়া গেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক আন্তর্জাতিক ট্রাস্ট এবং কর্পোরেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান এশিয়াসিটি ট্রাস্টথেকে।
প্যারাডাইস পেপারসে ফাঁস করা নথিতে রয়েছে ১৯৫০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় ৭০ বছরের তথ্য।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রাথমিকভাবে ফাঁস করা তথ্যে বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত, ক্ষমতাশালী ও প্রভাবশালী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম পাওয়া গেলেও বাংলাদেশি কারও তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এর আগে প্রকাশিত বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে বাংলাদেশিদের নাম থাকায় ধারণা করা হচ্ছিল এবারও এমন কারও নাম থাকতে পারে। আইসিআইজে’র প্রকাশিত তালিকায় এবার সেই ধারণাই সত্যি প্রমাণিত হলো।