দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাক খাতকে ‘দুর্বল শিশু’ আখ্যা দিয়ে পোশাক রপ্তানির সব ক্ষেত্রে অন্তত ৩ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিজিএমইএ।
তবে তাদের সব দাবি পূরণ না হলেও বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বলে জানিয়েছে
সংগঠনটি।
রোববার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানাতে বিজিএমইএ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক।
পোশাক রপ্তানিতে ১ শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ায় বাজেটে ৭০ ভাগ খুশি বলেও জানান তিনি।
রুবানা হক বলেন, ‘প্রতিনিয়ত শুনতে হয়, আমরা ম্যাচিউরড, এস্টাব্লিশড, আমাদের আর সাহায্য দরকার নেই, এসব কিন্তু ঠিক নয়। প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদরাও তা বলে থাকেন। পোশাকে কিন্তু ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি নেই। গড়ে ৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত এক মাসে আমরা ৩০টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। ঈদের আগে অনেক কারখানা মালিক মেশিন বিক্রি করে হলেও বেতন দিয়েছে।’
পোশাক খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রণোদনা বাড়ানো দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকবছরে আমরা সর্বোচ্চ ৮শ কোটি টাকার প্রণোদনা উঠিয়েছি। নানারকম আমলাতান্ত্রিক ঝামেলার কারণে অনেকেই ইনসেন্টিভ পান না, নেনও না। নতুন বাজারের ক্ষেত্রে প্রণোদনা বাড়ানো উচিৎ। পোশাক খাতকে পরাজিত বনের বিড়াল বানাবেন না।’
কৃষকের সঙ্গে মালিকের তুলনা করা চলে না উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গেলে আমাদের (পোশাক খাত) মনে হয় শিশু। দুর্বল শিশুর অবস্থানে চলে এসেছি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রণোদনা অন্তত ৩ শতাংশে উন্নীত করার দাবি করছি।’
এসময় পোশাক কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতে ভ্যাট অব্যাহতির বিষয়টিকেও স্বাগত জানান তিনি।
নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে রুবানা হক বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির স্বপ্ন দেখানোর সময় এসেছে। আমরা ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা দেখতে চাই। দেশের পোশাকশিল্প যেন বিশ্ববাজারে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘বাজেটে আমরা ৭০ ভাগ খুশি। কিন্তু দেশের পোশাকশিল্প এখনো অপরিপক্ব। প্রণোদনা বাড়ানো না হলে এখাত বাঁচবে না। অন্তত ৩ শতাংশ প্রণোদনা চাই।’
“বাজেটের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এটি জনকল্যাণমুখী বাজেট বলেছিলাম। আমি এখনও আগের অবস্থানেই আছি। এটি ব্যবসা বান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বাজেট।”
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ, সহ-সভাপতি এম এম মান্নান কচিসহ সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।