তৈরি পোশাক খাতের উৎসে কর মওকুফ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং রপ্তানিমুখী সবার জন্য একই হারে কর্পোরেট কর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় নিট পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, আসছে ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের উৎসে কর থেকে রাজস্ব আসে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে এই খাতে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত। তা ছাড়া পৃথিবীর কোথাও রপ্তানি জাতীয় পণ্যের ওপর উৎস কর নেই। তাই বিদ্যমান শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশের পরিবর্তে শূন্য শতাংশ করা এবং আগামী তিন বছরের জন্য তা কার্যকর রাখা প্রয়োজন।
বন্ডের সুবিধা অপব্যবহারীদের বিরুদ্ধে সদস্যপদ বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, বন্ডের অপব্যবহারকারীদের আমরাও সাপোর্ট করি না। আমাদের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যদি এ ধরনের অন্যায়কারী শনাক্ত হয়, তাহলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হবে। আর অস্তিত্বহীন কারখানার বন্ড লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। রপ্তানিতে সর্বোচ্চ সুবিধা সব খাতই পাবে এমনটি চাই আমরা। একই সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি ও রপ্তানির বৃহত্তর স্বার্থে কর্পোরেট ট্যাক্সের হার ১২ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা দরকার।
এনবিআর থেকে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা যন্ত্রণামুক্ত থাকতে চাই। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি থেকে মুক্তি চাই। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের অডিট কার্যক্রমের জন্য দলিলাদি দাখিলের সময়সীমা ৩ মাসের পরিবর্তে ৬ মাসের বিধান রাখা দরকার।
এ ছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের নিরাপত্তা জনিত কার্যক্রমে ব্যবহুত সকল উপকরণ সিসি ক্যামেরা ও তার যন্ত্রাংশ, আর্চওয়ে ইত্যাদি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।
এরপর এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, দেশি পণ্য বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া হবে। এটা করতে পারলে দেশের রেমিট্যান্স বাড়বে। আর দেশের প্রয়োজনে আমদানি ঠিক রাখতে এর প্রয়োজন রয়েছে। তবে সুষ্ঠু ব্যবসার স্বার্থে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। কর নেট বাড়ানো দরকার। ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়লে রাজস্ব আদায় এমনিতেই বাড়বে।