বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য পেতে বার্গেনিং ক্যাপাসিটি (দর কষাকষির ক্ষমতা) বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় কমাতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেল কেন্দ্রে ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অব এ্যাপারেল ইন্ডাষ্ট্রি: প্রোসপেক্ট অ্যান্ড অবসটেকলস’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও মেশিনারিজ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) সহযোগিতায় ৩ দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এক্সপোর্ট এক্সিবিশন।
অনুষ্ঠানে টিপু মুনশি বলেন, দেশের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টা চলছে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প রাতারাতি বর্তমান অবস্থায় আসেনি। খুবই স্বল্প পরিসরে পোশাকশিল্প যাত্রা শুরু করেছিল। অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।
দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৪ ভাগ তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বাংলাদেশের পোশাক খাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখিয়েছে। দেশে এখন অনেক অত্যাধুনিক পোশাক শিল্প গড়ে উঠেছে। গ্রীন ফ্যাক্টরির (সবুজ কারখানা) সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী।
‘তবে অনেক দেশে আমরা এ পণ্য রপ্তানি করতে পারি না। মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশ বিভিন্ন বাজারে আমাদের পণ্য রপ্তানি করে লাভবান হচ্ছে। এখন সেসব বাজারে প্রবেশ করতে হবে। প্রচেষ্টা চলছে, আশা করি আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমরা ব্রাজিল-রাশিয়ার মত বড় রপ্তানি বাজারগুলোতে প্রবেশ করতে পারবো’, বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠানে আমাদের এনার্জির ব্যবহার কমিয়ে সোলারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিশ্বমানের সোলার প্যানেল এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। রিসাইকেলিং করে পানির ব্যবহার অনেক কমানো সম্ভব। এতে করে পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারবো।
পোশাকের উপযুক্ত মূল্য আদায় করতে পারছি না উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এজন্য বার্গেনিং ক্যাপাসিটি (দর কষাকষির ক্ষমতা) বাড়াতে হবে এবং উৎপাদন ব্যয় কমাতে হবে। ক্রেতারা সবসময় চাইবে কমদামে পণ্য ক্রয় করতে। এ ক্ষেত্রে দক্ষতার বিকল্প নেই। আমাদের দেশের পণ্যের মান ভালো এবং বিশ্ববাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
বিদুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ইনোওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা ফার্নো সুসাই, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি মো. ফজলুল হক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইলসর প্রফেসর ড. মো. জুলহাস উদ্দিন প্রমুখ।