বুকে দৃশ্যমান হলুদ ফিতা। অন্তরালে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার দাবি। গত নভেম্বরে এভাবে মাঠে নামা ম্যানসিটির কোচ পেপ গার্দিওলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ)) তোপের মুখে পড়েছেন। আগামীকাল রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আর্সেনালের বিপক্ষে ক্যারাবাও কাপের ফাইনালে একই কাজ করলে নিষিদ্ধ হবেন।
গার্দিওলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হলুদ ফিতা পরে ফুটবল মাঠে তিনি রাজনীতির বার্তা টেনে এনেছেন। এফএ’র বিজ্ঞাপনী নীতিমালা অনুযায়ী, সেটি ‘অপরাধ’।
নভেম্বরে ওই ম্যাচের পর গার্দিওলা বলেছিলেন, কাতালোনিয়ায় বন্দী রাজনীতিবিদদের সমর্থনে তিনি হলুদ ফিতা পরে সাইডলাইনে দাঁড়ান।
বার্সা এবং স্পেনের সাবেক এই মিডফিল্ডারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। ৫ মার্চ সন্ধ্যার ভেতর তাকে জবাব দিতে হবে। এফএ’র তরফ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ গার্দিওলাকে দুইবার আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা হয়। কিন্তু বার্সার সাবেক এই কোচ সেটি পাত্তা দেননি।
স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিত্তশালী একটি অঞ্চল কাতালোনিয়া। জনসংখ্যা ৭৫ লাখ। এর রাজধানী বার্সেলোনা। কাতালোনিয়ার নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, পার্লামেন্ট, জাতীয় পতাকা ও সংগীত আছে। এমনকি কাতালোনিয়ার নিজস্ব পুলিশ বাহিনী আছে এবং স্কুল ও স্বাস্থ্যসেবার মতো জন পরিষেবাগুলোও এই অঞ্চল নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করে। এই অঞ্চলের ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। স্পেন থেকে পুরোপুরি পৃথক হতে স্বাধীনতা ‘ঘোষণা’ করেছে তারা। কিন্তু স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার সেটি মানতে নারাজ। কেন্দ্রের বাধা উপেক্ষা করে ১ অক্টোবর গণভোটের আয়োজন করে কাতালোনিয়া। এতে ৯০ শতাংশ ভোটার কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন। এরপর আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হেফাজতে পাঠান স্পেনের আদালত। তারা হলেন কাতালান জাতীয় পরিষদের (এএনসি) জোর্দি এস নেচ এবং ওমনিয়াম কালচারের নেতা জোর্দি কুইজার্ত। সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গার্দিওলা তাদের মুক্তির পক্ষে।
নভেম্বরে তিনি বলেন, ‘একদিনের জেল মানেই অনেক কিছু। কিন্তু দেখুন সেখানে তারা দিনের পর দিন পার করছেন। আমরা সবাই জানি এবং আশা করি আজ অথবা কাল তারা মুক্তি পাবে। এবং আমি এই হলুদ ফিতা ত্যাগ করবো।’