শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুমেও শাকসবজির দাম সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে। সারাদেশে পেঁয়াজের দাম যখন রেকর্ড পর্যায়ে এসে উঠানামা করছে, তখন সবজির বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে যুক্তি দেয়া হলেও সবজির দাম কেন বাড়ছে, তার কিন্তু পরিস্কার কোনো জবাব বা যুক্তি নেই।
পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। পেঁয়াজের পাশাপাশি হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পর খুচরা বাজারে তা এখনো কমেনি।
সাধারণত বন্যা, অতি-বৃষ্টি, অনাবৃষ্টির ফলে বিভিন্ন ফসলসহ সবজির ফলন বা সরবরাহে ঘাটতি দেখা গেলে সেসবের দাম বাড়তে দেখা গেছে অতীতে। কিন্তু বর্তমানে এই ভরা মৌসুমেও সবজির দাম কেন চড়া, তা চিন্তায় ফেলেছে জনগণসহ সরকারকে।
ধারণা করা হচ্ছে, অতি মুনাফালোভী ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন বাড়তি খরচ করতে করতে জনগণ বিক্ষুব্ধ ও হতাশ। গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে সাধারণ মানুষ তাদের করুণ অবস্থার কথা জানিয়ে বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মন্ত্রী ও দায়িত্ববান অনেকে জনগণকে ধৈর্য ধরতে বলাসহ নানাসময়ে নানা কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এই বাজার ব্যবস্থা কারা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে, তা যেনো ‘রকেট সায়েন্স’ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আর এই অবস্থা ধীরে ধীরে জনরোষ বাড়াচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাজারে ভোক্তা অধিকারসহ দুর্নীতি দমন কমিশনকে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই, তারপরেও খুব একটা পরিবর্তন নেই বললেই চলে।
আমদানি-রপ্তানি, বাজার মনিটরিং, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টসহ নানা পদক্ষেপে সরকারের দায়িত্বশীলদের আরো কার্যকর মনোযোগ দরকার বলে আমরা মনে করি। এছাড়া নিত্যপণ্যের দাম বিষয়ে তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও বাজারে সক্রিয় অসাধু সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণও জরুরি। আমাদের আশাবাদ, সবার সম্মিলিতি প্রচেষ্টায় এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন আসবে।