লাগামহীনভাবে ছুটছে পেঁয়াজের দাম, গত বুধবার ১৭০ টাকা দরে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে তা এখন ২০০ টাকা থেকে ২০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর হিসাব মতে দেশি পেঁয়াজের দাম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি।
সাধারণত রমজান ও কোরবানীর ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী থাকে দেশের বাজারে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি সাময়িকভাবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ ঘোষণা করলে বাংলাদেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে দাম।
দেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তার চেয়ে ৭ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টনের ঘাটতি রয়েছে। যার বেশিরভাগই প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে আনা হয়। এছাড়া মিয়ানমার ও চীন থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তবে এবছর বিকল্প বাজার হিসেবে মিশর, মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসা হয়েছে দেশে।
জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে টিসিবির মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্পমূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানির অর্থায়নে সুদ কমিয়ে সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ বেধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যবস্থা গ্রহণ ইতিবাচক। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, বাণিজ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীও পেঁয়াজের দাম নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এতকিছুর পরেও কেন ও কী কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে, তা খতিয়ে দেখতে পারে সরকার। কারণ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ভরা মৌসুমে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা থাকলেও কখনো কখনো তা মারাত্মক হারে বেড়ে যায়। এই অবস্থার পরিবর্তনে সারাবছর উৎপাদনসহ আমদানি-মজুদে বিশেষ নজর প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। উৎপাদন-আমদানি, মজুদ আর বাজার সমন্বয় চক্রে কোনো সমস্যা বা কারসাজি আছে কিনা, তাও জরুরি ভিত্তিতে দেখে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেই আমাদের আশাবাদ।