রাজধানীর গুলশান-১ এর ডিসিসি মার্কেটের আগুন এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে কয়েকশ’ দোকান, দোতলা মার্কেটের দুটি অংশ ধ্বসে গেছে। নিজ হাতে গড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমন ছাই হতে দেখে অন্ধকার দেখছেন এর ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি কর্মচারীদের চোখে মুখেও এখন কেবলই হতাশা। বিপুল এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে বিশেষ সহায়তা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
সোমবার দিবাগত রাত দুইটার কিছু পরে হঠাৎই আগুন লাগে গুলশান ১ নম্বরের ডিসিসি মার্কেটে। এতে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আনিসুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আগুনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন তিনি। এছাড়াও দোকান মালিক ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে দোকান মালিকদের মেয়র অনুরোধ করেছেন যেন তারা মার্কেট থেকে মালপত্র সরিয়ে নেন। তিনি নিশ্চিত করেন এটি কোনো নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড নয়। ডিসিসি মার্কেট উচ্ছেদ করার কোনো পরিকল্পনা ছিল না।
অতিপরিচিত গুলশান এক নম্বরের ডিসিসি মার্কেটের এখনকার দৃশ্য এখন একেবারেই অচেনা। পুড়ে ছাই হয়ে মার্কেট ভবন ধ্বসে পড়ার সাথে সাথে অনেকেই হারিয়েছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন।
মধ্যরাত থেকে জ্বলা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এত দেরী হওয়ায় মৃত্যু ঘটেছে হাজারো স্বপ্নের। চারদিকে এখন শুধুই ধ্বংসযজ্ঞ। আগুন, ছাই আর ধুঁয়ার মধ্য থেকেই নিজের শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। নিজেদের মূল্যবান সম্পদ বাঁচাতে না পারার ক্ষোভও অনেক।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন এই ভাবনায় তারা।
ডিসিসি মার্কেটের আগুনকে নাশকতা বলে দাবি করে কাঁচাবাজার দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান। তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য নাশকতামূলকভাবে আগুন লাগানো হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি মালিক সমিতির।
আগুন লাগার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ফায়ার সার্ভিস। মার্কেটের ভেতরে দাহ্য পদার্থসহ কাঠের সরঞ্জাম বেশি থাকায় ভবনটির সব মুহূর্তের মধ্যে অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ধসে পড়ে ভবনটির একাংশ।
মার্কেটটিতে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় ফায়ার ফাইটারদের। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ী এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মাঝে। গুলশান লেক থেকে পানি টেনে এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলে।
বিভিন্ন ফায়ার স্টেশন থেকে অনেকগুলো ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) মেজর শাকিল।
আগুন লাগার কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণেও আগুন লেগে থাকতে পারে। আশপাশের ভবনে যেন আগুন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।