ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শহরজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন সংগীত নিকেতনে হামলা চালিয়ে সুরসম্রাটের ব্যবহার করা সব জিনিসপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। হামলার পর শুধু সংগীত বিদ্যালয়টি এখন শুধু কঙ্কাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
শুধু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নামে সংগীত বিদ্যালয়ই নয়, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম দাবি উত্থাপনকারী এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নামে যে ভাষা চত্বর; সেই চত্বরসহ এরকম আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলা চালায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা।
রেল স্টেশনও ছিলো তাদের টার্গেট। রেলের ফিসপ্লেট উঠিয়ে ফেলার পাশাপাশি হামলায় ক্ষয়-ক্ষতির কারণে সাড়ে ৮ ঘন্টা বন্ধ থাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেল যোগাযোগ। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
এরকম হামলার কারণ সোমবার রাতের একটি তুচ্ছ ঘটনা যাকে কেন্দ্র করে শহরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ব্যবসায়ী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখি সংঘর্ষে আহত হয় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মাসুদুর রহমান। ভোরে তার মৃত্যু হলে বিক্ষুদ্ধ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক হরতাল ডেকে হামলা শুরু করে।
এর আগেই অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় বিজিবি এবং র্যাব। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাদ্রাসা ছাত্রদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর।হরতালে শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় বিক্ষুদ্ধরা।
পরে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে সহকারী পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোখলেসুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত হয়েছে কমিটি।
বুধবারও হরতাল ডাকা হলেও সন্ধ্যায় মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও প্রশাসনের মধ্যে আলোচনার পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।