চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে গিয়ে স্মৃতিকাতর দুইবোন

গুড়ি গুড়ি, কখনো বা মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। পুরনো স্মৃতি মনে করে আকাশটাও যেন কাঁদছে। এরই মধ্যে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করলেন বঙ্গবন্ধু বড় মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।

শনিবার প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানা ও ভাগ্নে ববিকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারা স্মৃতি জাদুঘরে যান। জাদুঘরের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।

এরপর স্মৃতি জাদুঘরের বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি নির্দশন গ্যালারিতে যান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ছবি রয়েছে। তিনি ঘুরে ঘুরে ছবিগুলো দেখেন। সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধু যে কক্ষটিতে বন্দি ছিলেন সেখানেও যান তার দুই মেয়ে।

কক্ষটিতে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত টেবিল, চেয়ার, হাড়ি-পাতিলসহ বেশ কয়েকটি আসবাবপত্র রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ সময় এ কক্ষটিতে অবস্থান করেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বাবার বন্দি থাকার কক্ষ ও ব্যবহৃত বিভিন্ন তৈজসপত্র দেখেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার চেহারায় বিষাদের চাপ ফুটে ওঠে। চোখে-মুখে বেদনার নীল রং স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

pm3

বঙ্গবন্ধুর কারা স্মৃতি জাদুঘর থেকে বের হয়ে পুরাতন কারাগারের বর্তমান নকশা দেখেন তিনি। এ সময় একজন কর্মকর্তা নকশার বিভিন্ন অংশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘরে যান। সেখানে প্রবেশ মুখেই রয়েছে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত যে জায়গাটিতে মরদেহ রাখা হয়েছিল, তার স্মৃতিচিহ্ন।

জাতীয় চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘরে প্রবেশের আগে এ জায়গাটিতে এসে মুহূর্তের জন্য থেমে যান প্রধানমন্ত্রী। জাদুঘর প্রাঙ্গনে থাকা জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।

এরপর ১৯৭৫ সালের ০৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের যে কক্ষটিতে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় সেখানে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। কক্ষটিতে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করেন তিনি। কারাগার পরিদর্শন শেষে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন, তখনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন রেহানার চেহারায় বিষাদের ছায়া ছিলো।pm2

১৭৮৮ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে নির্মিত হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল এবং স্বাধীন বাংলাদেশের নানা ঘটনার সাক্ষী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র ৮০ দিনের মাথায় জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এ কারাগারে।

গত জুলাই মাসে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন এ কারাগার বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ও জাতীয় চার নেতার জাদুঘর নির্মাণসহ ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা সংরক্ষনের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এটিকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্দিষ্ট করার আগে সরেজমিনে ঘুরে দেখার অংশ হিসেবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।