রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুর্নীতিগ্রস্থ বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যেই পুতিনের সহযোগীদের উপর অবরোধ আরোপ করলেও প্রথমবারের মতো দুর্নীতির দায়ে তাকে সরাসরি অভিযুক্ত করা হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির তদন্তে এই বিবেচনার কথা জানানো হয়।
অবশ্য পুতিনের মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছে, এইসব প্রশ্ন বা ইস্যুগুলোর উত্তর দেবার কোন প্রয়োজন নেই কারণ এগুলো কল্পনাপ্রসুত।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের একটি পাবলিক ইনকোয়েরি-তে বলা হয় পুতিন ‘সম্ভবত’ সাবেক চর আলেক্সান্দার লিতভিনেনকো-এর হত্যার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন। রাশিয়ান ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) এজেন্ট এবং পুতিনের কঠোর সমালোচক লিতভিনেনকোকে ২০০৬ সালে লন্ডনে ত্যাজস্ক্রিয় পলোনিয়াম দ্বারা বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব নিষেধাজ্ঞার তত্ত্বাবধান করা এডাম জুবিন বিবিসি প্যানোরামাকে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দুর্নীতিপরায়ণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এটি ‘অনেক, অনেক বছর” ধরেই অবগত।
তিনি বলেন, “আমরা তার (পুতিনের) বন্ধু, ঘণিষ্ঠ সহযোগীদের সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার করে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করতে দেখেছি এবং যাদের বন্ধু হিসেবে দেখা হতো না তাদের প্রান্তিক করে তোলার বিষয়টিও লক্ষ্য করেছি। রাশিয়ার জ্বালানি সম্পদই হোক, অন্যান্য রাষ্ট্রিয় চুক্তিই হোক তিনি তাদেরই দেন যারা তার পক্ষে কাজ করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এবং বিরোধীদের এক্ষেত্রে বাদ দেয়া হয়। আমার কাছে এটা দুর্নীতির একটি চিত্র।”
২০১৪ সালে ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠদের কিছু সংখ্যকের উপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার অবরোধ আরোপ করে এবং জ্বালানি খাতে পুতিনের গোপন বিনিয়োগ আছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সেই সময় আমেরিকা তাকে দুর্নীতির দায়ে সরাসরি অভিযুক্ত করেনি।
নিষেধাজ্ঞার আওতা পরবর্তীতে আরও ব্যক্তি এবং সংস্থাকে অন্তর্ভূক্ত করার মাধ্যমে বিস্তৃত করা হয়। পাশাপাশি ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ইউক্রেনে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সাথে যু্ক্ত করার কারণে ইইউ এই অবরোধ আরোপ করেছিলো।
২০০৭ সালে সিআইএর গোপন প্রতিবেদনে পুতিনের সম্পদের পরিমাণ ৪০ বিলিন ইউএস ডলারের কাছাকাছি উল্লেখ করা হয়েছিলো- এ বিষয়ে জুবিন কোন মন্তব্য না করলেও পুতিন গোপন সম্পদ সংগ্রহ করছেন বলে দাবি করেন। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এসকল দাবি প্রত্যাখান করা হয়।
এছাড়াও পুতিন ব্রিটেনের সবচেয়ে বিখ্যাত রাশিয়ান এবং চেলসি ফুটবল ক্লাবের মালিক রোমান আব্রামোভিচের কাছ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের ইয়ট উপহার হিসেবে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে পুতিনের আইনজীবী এই সকল দাবি ধারণা ও গুজব বলে বাতিল করে দেন।