রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক স্ত্রী লিউদমিলা পুতিনার লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তি ব্যবসায়ের সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পেয়েছে রয়টার্স। এই সংক্রান্ত খবর শুক্রবার এই বার্তা সংস্থাটিতে প্রকাশিত হয়।
সেন্ট্রাল মস্কোর ভলকোনস্কি হাউজ নামের একটি ঐতিহাসিক বাড়ির মালিক লিউদমিলার প্রতিষ্ঠিত একটি ফাউন্ডেশন। বাড়িটির ভাড়া থেকে প্রাপ্তি লাখ লাখ ডলার।
১৯৮৩ সালে লিউদমিলা ও পুতিনের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়।
মস্কোর ঐতিহাসিক এই বাড়িটির মালিক ছিলেন জেনারেল নিকোলাই ভলকোনস্কি, যিনি খ্যাতিমান রুশ লেখক লিও টলস্টয়ের দাদা । ২০ শতকে জনপ্রিয় কবি সার্জেই ইয়েসেনিনও এখানে সময় কাটিয়েছেন। এই ভবনে ভাড়ার জন্য রয়েছে ৫ হাজার ২৮৮ স্কোয়ার মিটার ফ্লোর স্পেস, যা হোয়াইট হা্উজের থেকেও বড়।
সোভিয়েত পূর্ব আমলের এই অভিজাত ভবন ২০০৫ সাল থেকে রাশিয়ান ভাষা সেন্টারের মালিকানায় ছিলো, যার পরবর্তীতে নামকরণ হয় সেন্টার ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব ইন্টার-পার্সেনাল কমিউনিকেশন্স (সিডিআইসি)। এই সিডিআইসির কার্যক্রম সামাজিক, দাতব্য, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক।
সিডিআইসি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে, যার সাথে প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে যুক্ত আছেন পুতিনের সাবেক স্ত্রী। প্রতিষ্ঠার সময় স্থানীয় পত্রিকা লিউদমিলাকে এর ‘ট্রাস্টি’ বলে অভিহিত করে।
নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভলকোনস্কি হাউজে সিডিআইসির অফিস রয়েছে, কিন্তু ভবনের অধিকাংশ অংশ ভাড়াটেদের জন্য ছেড়ে দেওয়া। এর মধ্যে ২ টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকও রয়েছে। এই ভাড়া থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার আয় হয়। প্রোপার্টি রেকর্ডস পরীক্ষা করে এই বিষয়ে তথ্য পেয়েছে রয়টার্স।
এরা ভাড়া প্রদান করে মেরিডিয়ান নামক এক বেসরকারি কোম্পানিকে, যার ৯৯ শতাংশ মালিক ইন্টারারসার্ভিস। কোম্পানির মালিকানা সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় নিবন্ধন অনুযায়ী এই ইন্টারারসার্ভিস এর মালিকানা ২০১৪ সাল থেকে সম্পূর্ণ লিউদমিলার আলেক্সানদ্রোভা ক্রেবনোভার। যা পুতিনের সাবেক স্ত্রীর বিবাহপূর্ব নাম। বাকি এক শতাংশ পুতিনের এক পুরোনো বন্ধুর স্ত্রীর। কর্পোরেট রেকর্ড থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
ক্রেবনোভা আর পুতিনের সাবেক স্ত্রী একই লোক কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করে এমন নথি রয়টার্স না পেলেও অন্যান্য সূত্র থেকে তা নিশ্চিত হয়। এক সূত্রে তারা জানতে পারে সংস্কারের সময় লিউদমিলা এখানে কাজ দেখতে এসেছিলেন, তখনও তিনি পুতিনের স্ত্রী ছিলেন।
ভাড়া থেকে মেরিডিয়ানের সর্বমোট আয় কত তা রয়টার্স নিশ্চিত হতে পারেনি এবং তা সিডিআইসি ফাউন্ডেশনকে কত দেয় তাও জানতে পারেনি।
মেরিডিয়ান, সিডিআইসির মন্তব্য শত চেষ্টা করেও পায়নি রয়টার্স। পুতিনের সাবেক ন্ত্রীকে নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি ক্রেমলিনের প্রেস সার্ভিস।
ভ্লাদিমির পুতিনের আত্মীয় স্বজনের সরকারি সুবিধা পাওয়ার তথ্য আগেও প্রকাশিত হয়েছে। পুতিনের জামাতা কিরিল শামারোভ রাশিয়ার গ্যাস ও পেট্রোক্যামিকেল কোম্পানির বড় শেয়ার পেয়ে কিভাবে কোটিপতি হয়েছেন তাও প্রকাশ করে রয়টার্স।