চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

পাশবিকতার শিকার শিশুটির অস্ত্রোপচার এখনই সম্ভব নয়: চিকিৎসক

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাশবিকতার শিকার পাঁচ বছর বয়সী শিশুর জন্য ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকালে শিশুটির প্রজনন অঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানের ক্ষত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, এক-দুই মাসের আগে শিশুটির প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত প্রজনন অঙ্গের অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়।

দিনাজপুরের পাবর্তীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে শিশুটি ১৮ অক্টোবর বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে হারিয়ে যায়। পরদিন পাশের ক্ষেতে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় পায় স্বজনেরা।

পরে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। শিশুটির প্রতি পাশবিকতার ধরণ দেখে হতবিহ্বল চিকিৎসকরাও।

শিশু সার্জারির বিভাগীয় প্রধান এবং শিশুটির জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা: আশরাফুল হক কাজল বলেন, ওর ক্ষতটা প্রবল সেজন্য চেতনানাশক প্রয়োগ করে পরীক্ষা করেছি। অনেক সময় এই ধরনের বাচ্চারা সেপ্টিসেমিয়াতে আক্রান্ত হয় অর্থাৎ রক্ত সংক্রমণের শিকার হয়। সেটা যেন না হয় সেজন্য আমরা তাকে ভালো অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করছি।

চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটির শরীরের প্রজনন অঙ্গ ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত আছে। এ কারণে সে মারাত্বক ইনফেকশনে আক্রান্ত। এছাড়াও শিশুটি মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। ডা: আশরাফুল হক কাজল আরো বলেন, সে তার আশেপাশে কাউকেই সহ্য করতে পারছে না। সেজন্য মানসিকচিকিৎসকের সাপোর্টের প্রয়োজন রয়েছে। সেটা শুধু এখনকার জন্য নয় দীর্ঘমেয়াদে প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আশা রাখি এক দুই মাস পর সে খানিকটা সুস্থ হলে তখন রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি করা যাবে।

এই অবস্থায় আজ শিশুটিকে পোস্ট অপরেটিভে নিয়ে অচেতন করে তার শরীরের ক্ষত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির চিকিৎসার দায়ভার বহন করছে।

পাশাপাশি শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতনকারী সাইফুলের দৃষ্টান্তমুলক সাজার জন্য ওসিসি কাজ করছে। তবে সামাজিক প্রেক্ষাপটে অসচেতনতা ও অন্যান্য কারণে অধিকাংশ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে নেয়। এতে করে এসব চরম ঘৃণীত অপরাধীরাও পার পেয়ে যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী উপ পরিচালক ডা: খাজা এ গফুর বলেন, তার চিকিৎসা চলছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্ত ও অপরাধীরা নিজেরা নিজেরা মিটআপ করে নেন। পরে ফলোআপ আমরা আর দিতে পারিনা। এখান থেকে শুধু চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে রোগী চলে যায়। পরের অবস্থাতো আইনজীবী বা আদালত ডিল করে।

চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটির শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।