মাত্র বারো ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে দু’টি জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। একটি কাকরাইলে আরেকটি রাজধানীর বাড্ডা এলাকায়। কাকরাইলে মা-ছেলে, বাড্ডায় বাবা-মেয়ে খুন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, উভয় ঘটনা পারিবারিক কলহের জেরে হয়েছে। কাকরাইলের ঘটনায় গৃহকর্তা শেখ আব্দুল করিম ও তার তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর বাড্ডায় বাবা-মেয়ে হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন প্রতিবেশী শাহীনকে খুলনা থেকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া নিহতের স্ত্রী এই ঘটনায় জড়িত বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। এরকম পারিবারিক সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ার ঘটনা স্বাভাবিকভাবে শঙ্কার বিষয়। অথচ একসময় বাংলাদেশের শহর কিংবা গ্রাম, সবখানেই পারিবারিক অটুট বন্ধন ছিল গর্ব করার মতো বিষয়। এ দু ক্ষেত্রে হয়তো না, কিন্তু সামগ্রিকভাবে পারিবারিক বন্ধন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনোবিদরা প্রযুক্তিকে অনেকাংশে দায়ী করেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা বিভিন্ন প্রযুক্তিতে সারাক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকার ফলে পরিবারকে তেমন একটা সময় না দেয়ার কারণেও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার আমাদেরকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যেতে পারে। তবে এর অপব্যবহার আবার ঠিক একইভাবে অধঃপতনেরও কারণ। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার আর আধুনিক ব্যবসা বাণিজ্য যাই হোক না কেন, তা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার জন্যই করা হয়। সেখানে মূল বন্ধন ছিন্ন করে এভাবে পারিবারিক সন্ত্রাস বৃদ্ধির ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া অন্যান্য আর কী কারণে এমন ঘটনাগুলো ঘটতে পারে তা খুঁজে বের করতে হবে। এই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এই ঘটনাগুলোকে আমরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চাইলেও এসব বিষয়ে এখন থেকে চিন্তা ভাবনা না করলে বিষয়গুলো বিষফোঁড়া হয়ে উঠতে পারে।