ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি বলেছেন, তাদের দেশের পারমানবিক কার্যক্রম নিয়ে বিশ্বশক্তিদের সাথে চুড়ান্ত চুক্তির বিষয়ে কোন নিশ্চয়তা নেই। খোমনীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে আজ তিনি পশ্চিমাদের সাথে ইরানের চুক্তির বিষয়ে তার এ বক্তব্য তুলে ধরেন।
এরআগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানী বলেছিলেন, দেশটির উপর আরোপিত অবরোধ চুক্তি বাস্তবায়নের প্রথম দিন থেকেই তুলে নেয়া না হলে ইরান চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে না।
গত সপ্তাহে ইরান এবং বিশ্ব শক্তি ইরানের পরমানু কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে তাদের উপর থেকে পশ্চিমাদের অবরোধ তুলে নেয়া সংক্রান্ত একটি চুক্তির কাঠামোতে পৌছতে পেরেছিলো। তখন থেকেই ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন নিজ নিজ দেশের উগ্রপন্থিদের প্রভাবিত করার জন্য চুক্তির পক্ষে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে আসছেন।
খোমেনী তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই বক্তব্যে চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী ছয়টি দেশকে বিশ্বাসের অযোগ্য উল্লেখ করে বলেছেন, চুক্তির বিস্তারিত পর্যায়ে গিয়ে আমাদের দেশকে আরো অবরুদ্ধ করে দিতে তাদের আকাঙ্খার কথাও উঠে আসতে পারে।
তিনি বলেন, “আমি আমিরিকার সাথে আলোচনা করে কখনোই আশাবাদী হতে পারি না। আমি আশাবাদী না হলেও এ বিষয়ে আলোচনায় রাজি ছিলাম এবং আলোচকদের সমর্থন করেছি।”
চুক্তির শর্তানুযায়ী ইরানকে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমাতে হবে যেটা পারমানবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে এবং দুই-তৃতীয়াংশ সেন্ট্রিফিউজ ধ্বংস করে দিতে হবে যেটা অধিক সংখ্যায় পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে তাদের সক্ষমতা বাড়াবে। এর পরিবর্তে দেশটির উপর জাতিসংঘের আরোপিত অবরোধ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন কর্তৃক দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার বিভিন্ন পদক্ষেপও প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
তবে বিশ্ব পারমানবিক পর্যবেক্ষক আন্তজাতিক পরমানু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) পরমানু কার্যক্রম কমানোর ক্ষেত্রে ইরানের সহযোগিতার বিষয়ে নিশ্চিত করলেই তা করা হবে।
সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে বৃহস্পতিবার মি. রোহানীর বক্তব্যেরও প্রতিধ্বনী করেছেন মি খোমেনী।
প্রেসিডেন্ট রুহানী বলেন, “চুক্তি বাস্তাবয়নের প্রথম দিন থেকে ইরানের উপর থেকে সকল অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিতে হবে। অন্যথায় আমরা চুক্তিতে সাক্ষর করবো না”।
রুহানীর বক্তব্য পশ্চিমা শক্তির বক্তব্যের থেকে ভিন্ন। পশ্চিমারা ধীরে ধীরে অবরোধ তুলে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন এবং ইরানের সহযোগিতার সাথে এটি সম্পর্কযুক্ত। অবরোধ পর্যায়ক্রমে তুলে নেয়া হবে বলে সোমবারে আমেরিকার প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইরানের অনেক মানুষ এ চুক্তিকে উৎযাপন করেছে। কিন্তু উগ্রপন্থিরা এ চুক্তি বয়কট করেছে। তাদের মতে চুক্তিতে ইরান অনেক কম প্রিাপ্তির বিনিময়ে অনেক বেশি সমর্পণ করছে।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কিছু অংশ এ চুক্তি বিষয়ে দ্বিধান্বিত। আবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু চরমভাবে এর বিরোধীতা প্রকাশ করেছেন।