কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। চারদিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন করে তলিয়ে গেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার আট হাজার হেক্টরসহ আরো ৩০ হাজার হেক্টর বোরো ধান। ফলে কিশোরগঞ্জের হাওরের বিস্তীর্ণ ফসলের জমির ধান যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি পানির দামে বিক্রি হচ্ছে সেখানকার গবাদি পশু।
আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ হাজার হেক্টরে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পশুখাদ্য সংকট, তাই কৃষকরা তাদের গবাদিপশু পানির দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি স্থানীয়দের।
তারা বলছেন, সব ধরণের গবাদি পশুর দাম কমে অর্ধেক হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা দামের গরু বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকায়। একই ভাবে ছাগল, ভেড়াসহ সব গবাদি পশু পানির দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা।
কিশোরগঞ্জের হাওরের নিচু এলাকার ধান তলিয়ে গেছে এক সপ্তাহ আগেই। তবে উচু জমির ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছিল হাওরের কৃষকরা। কষ্টে বোনা ধান কাটার স্বপ্ন দেখছিল আংশিক হাওর বেষ্টিত এলাকার মানুষও। তবে তাদের সে স্বপ্ন মিশে একাকার হয়ে গেছে বানের ঘোলা পানিতে।
চার দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নতুন করে ডুবে গেছে, জেলার তাড়াইল , অষ্টগ্রাম, মিঠামইনসহ জেলার ৭টি উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর জমির ধান। এসব এলাকায় কৃষকদের মধ্যে চলছে হাহাকার। এরই মধ্যে অনেক কৃষক কাঁচা ধান কেটে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে বৃষ্টির কারণে এসব ধানেও পঁচন ধরেছে।
যেখানে এখন থাকার কথা সোনালী ধানের সমারোহ, সেসব জমিতে এখন শুধুই বানের পানি। কৃষকের ঘরে যেমন নেই নিজের খাবার তেমনি নেই গবাদি পশুর খাবারও। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর আকুতি ক্ষতিগ্রস্তদের।
কৃষকদের দুর্দিনে কৃষিঋণ মওকুফসহ আগামী এক বছর রেশনিং পদ্ধতি চালুর দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।তবে এ ক্ষেত্রে সাধ্যমতো এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কিশোরগঞ্জে এবার ১ লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। রবিবার পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলায় অন্তত ৯০ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দেড়লাখ কৃষকের মধ্যে মাত্র ৫৩৫ মে: টন চাল ও ২৬ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।