উগ্রবাদী ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে দেশের প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচিত লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে পরিবর্তন আনা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব ও জাতীয় পাঠ্যপুস্তক কারিকুলাম বোর্ডের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রুলের সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করি। কারণ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করেছি যে ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদী সংগঠনের সুপারিশে স্বনামখ্যাত লেখকদের লেখা পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর বদলে সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ও বিতর্কিত অনেক বিষয় শিক্ষার্থীদের মগজে ঢুকানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এ দেশের পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতার প্রতিফলন থাকতে হবে। কিন্তু এর বদলে হেফাজতের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠ্যক্রমে এসেছে সাম্প্রদায়িকতার প্রতিফলন। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের দ্বারা ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন পরবর্তী প্রজন্ম তৈরির এই অশুভ উদ্যোগ আমরা সমর্থন করতে পারি না। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দাবির মুখে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন হওয়ার ঘটনা অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কার বিষয়। তাই ভবিষ্যতের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে পাঠ্যপুস্তকের হেফাজতিকরণ অচিরে বন্ধ করে প্রখ্যাত লেখকদের লেখা ফিরিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে প্রখ্যাত লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা জোরালো দাবি করছি।