বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের মনাজির পাড়ার আলমগীর। শ্যালকের কথায় প্রথমে বৈধ পথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে যে কোনোভাবে বিদেশ যাওয়ার মানসিকতায় দালাল ধরেন তিনি। গত বছরের শুরুর দিকে স্থানীয় দালালের সঙ্গে পাড়ি জমান টেকনাফ। তারপর নিরুদ্দেশ।
শুধু আলমগীর নয়, এ অঞ্চলের প্রত্যন্ত জনপদ থেকে যারা দালালদের প্ররোচণায় লাখ টাকা খরচ করে সাগর পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন, তারা এখনও দালালদের নাম বলতে ভয় পান। স্থানীয়রা বলছেন, দালাল চক্র প্রভাবশালী, এমনকি কেউ কেউ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। তাদের নাম প্রকাশ করলে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।
আলমগীরের স্ত্রী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, দালালদের প্ররোচনায় পড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। বলেছিলেন বিদেশ থেকে ফোন করবেন।
তার মা বলেন, নৌকা থেকে ছেলে ফোন করে বলেছিলো, খুব অসুবিধায় আছি। মাঝি পরে ফোন কেড়ে নেয় এবং বলে আর কোনোদিন ফোন করতে পারবি না। হুজুরকে দিয়ে গণনা করে দেখেছি ছেলে বন্দী আছে।
বড় ভাইকে খুঁজতে টেকনাফের নারী দালাল তফু রানীর কাছে গিয়েছিলেন ছোটভাই। তাকে ২০ হাজার টাকাও দেন। কিন্তু খোঁজ মেলেনি।
আলমগীরের ভাই বলেন, টুন্নার দোকানের সামনে আমি কান্নাকাটি করছি দেখে স্থানীয়রা দালালের বাড়ি দেখিয়ে দেয়। তখন দালাল তফু রানীসহ সাত জন চলে গেছে।
পাশের পাড়ার আরেক আলমগীরও একই ধরনের প্রতারণার শিকার হন। তবে ২ লাখ টাকা হারালেও প্রাণ নিয়ে ফিরতে পেরেছেন। তবে এই মালয়েশিয়া ফেরত বলেন, একজন মারা গেছে, কয়েকজনের জেল হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দালালরা এখনো নিচ্ছে। সুযোগ পেলে শীতকালে আবার নেবে। তখন সাগর শান্ত থাকে নিতে সুবিধা হয়। দালালরা আওয়ামী লীগের হুমকি দেয়। পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।
ভাগ্য ফেরাতে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন তারা। ভাগ্য ফেরেনি। সঙ্গী হয়েছে দুর্ভাগ্য আর দুঃসহ স্মৃতি। তারা চান আর কেউ যাতে এমন দুর্ভোগের শিকার হোক।