কাশ্মিরে জঙ্গিবাদের প্রসারের জন্য ইসলামাবাদ ১৯৯০’র দশকে লস্কর-ই-তাইয়্যেবা’র মতো দলগুলোকে সমর্থন এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছিলো। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ এ কথা স্বীকার করেন।
সাবেক এই সেনা প্রধান এ-ও স্বীকার করেন যে, হাফিজ সাঈদ এবং জাকিউর রেহমান লাখভি’র মতো লস্করের নেতারা ওই সময় বীরের সম্মান পেতো।
পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম দুনিয়া নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মোশাররফ বলেন, ‘১৯৯০’র দশকে কাশ্মিরে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। ওই সময় লস্কর-ই তাইয়্যেবাসহ ১১/১২টি সংগঠন তৈরি হয়। দলগুলো যেহেতু জীবন বাজি রেখে কাশ্মিরে লড়াই করতো, তাই আমরা তাদের সমর্থন করতাম এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিতাম।’
২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার মূল হোতা সাঈদ ও লাখভির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে পারভেজ মোশাররফ কথাগুলো বলেন।
সাঈদ ভারতে মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীদের তালিকায় রয়েছে সাঈদ। বর্তমানে সে পাকিস্তানে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মাঝে মাঝেই ভারতবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করছে। অন্যদিকে মুম্বাই হামলায় অভিযুক্ত লাখভিসহ আরো ৬ আসামী হামলার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের অপরাধে বিচারাধীন রয়েছে। তবে এ বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানের একটি আদালত লাখভিকে জমিনে মুক্ত করে দেয়, যা নিয়ে ভারতে তীব্র নিন্দা এবং বিরোধিতার ঝড় ওঠে।
পারভেজ মোশাররফ বলেন, ‘ওই সময় হাফিজ সাঈদ এবং লাখভির মতো কাশ্মিরি মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জন্য একেকজন বীর হিসেবে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময় তাদের ধর্মীয় মৌলবাদ জঙ্গিবাদে রূপ নেয়। এখন তারা (পাকিস্তানে থাকা জঙ্গিরা) নিজেদের মানুষকেই হত্যা করছে।’ এদের নিয়ন্ত্রণ করা এবং থামানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তবে অন্য জঙ্গিদের সঙ্গে সাঈদ এবং লাখভিকেও ‘নিয়ন্ত্রণ করা এবং থামানো প্রয়োজন’ কিনা সে ব্যাপারে মোশাররফ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট জানান, ‘ধর্মীয় মৌলবাদ’ পাকিস্তানে শুরু হয়েছিলো। পাকিস্তানি প্রথম সোভিয়েত বিরোধি লড়াই করার জন্য সারাবিশ্ব থেকে মৌলবাদীদের একত্রিত করেছিলো। তিনি বলেন, ‘আমরা তালেবানদের প্রশিক্ষণ দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠাতাম। তালেবান, হাক্কানি, ওসামা বিন লাদেন ও জাওয়াহিরি আমারে তখন হিরো ছিলো। পরে তারা ভিলেন হয়ে যায়।’
এসব কথার সঙ্গে মোশাররফ এটাও বলেন যে, জনগণকে সেই সময়কার পরিস্থিতিটাও আগে বুঝতে হবে।