প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়ার সময় হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অপরাধে ২০১০ সালে ব্লাসফেমি আইনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী আসিয়া বিবিকে (৫৩) অাশ্রয় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইটালি।
বুধবার ইটালির উপ-প্রধানমন্ত্রী ম্যাটিও সালভিনি আসিয়া বিবিকে আশ্রয় দেয়ার এ প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মেইল।
ইটালির উপ-প্রধানমন্ত্রী ম্যাটিও সালভিনি বলেন, মানুষ দ্বারা সব কিছু সম্ভব। আসিয়া বিবির পরিবারের উপর দেশ ত্যাগের যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা বাতিল করে আসিয়া বিবির পরিবারকে নিরাপদে ইটালি অথবা পশ্চিমা বিশ্বের যে কোন দেশে পাঠাতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আসিয়া বিবি ও তার সন্তানদের জীবন ঝুঁকিতে। আমার দেশ অথবা পশ্চিমা বিশ্বের যেকোন দেশে তার পরিবারের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমার পক্ষে যা করা সম্ভব তাই করবো। ২০১৮ সালে এসে ব্লাসফেমি’র অভিযোগ এনে কারো জীবন হুমকির মধ্যে পরবে তা মেনে নেয়া যায় না।’
আসিয়া বিবির সাজা থেকে অব্যাহতির ঘটনায় পাকিস্তান জুড়ে শুরু হয় কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভ। চলমান বিক্ষোভ সামলাতে কট্টরপন্থী ইসলামিস্ট দল তেহরিক-ই-লাবাইক পার্টির (টিএলপি) সঙ্গে শনিবার একটি সমঝোতায় পৌঁছায় দেশটির সরকার। সমঝোতার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে আসিয়া বিবি ওরফে আসিয়া নওরিনের দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এর আগে আসিয়া বিবির স্বামী আশিক মসিহ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র অথবা কানাডায় আশ্রয় পাওয়ার আবেদন করেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, পাকিস্তানে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।
আশিক মসিহ শনিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যেন তিনি আমাদের সাহায্য করেন এবং যদি সম্ভব হয় আমাদের মুক্তির ব্যবস্থা করেন।’ একই অনুরোধ তিনি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিও জানান।
গত শনিবার প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফ মুলুকও দেশত্যাগ করেন।
আসিয়া বিবি ইতোমধ্যেই অনেক বেশি ভুগেছে। সে প্রায় ১০ বছর জেলে কাটিয়েছে। মেয়েরা তাদের মাকে মুক্ত দেখার জন্য অস্থির হয়ে ছিল। কিন্তু এখন এই রিভিউ পিটিশন তার মুক্তির প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে দেয়া হয়।
আসিয়া বিবি বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন। তারপরও গত ৮ বছর ধরে প্রায় পুরোটা সময় কারাগারে একাকী বন্দী অবস্থায় কাটাতে হয়েছে তাকে।