চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায়’ নারীকে পেটালেন এএসআই

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় থানায় ডেকে এনে কহিনুর খাতুন (৪২) নামের এক নারীকে পিটিয়ে আহত করেছেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহানুর রহমান।

শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত কহিনুর ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘‘বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া বৌ-বাজার এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী কহিনুর দুই সন্তানের জননী। বগুড়া জজ কোর্টের সামনে খাবারের দোকানের আয় দিয়ে কহিনুর সংসারের খরচ চালান।

এএসআই শাহানুর রহমান ২০১০ সালে বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চাকরি করার সময় কহিনুরের দোকানে প্রতিদিন খাবার খেত। ওই সময় শাহানুর কৌশলে কহিনুরের নিকট থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে শাহানুর রহমান বগুড়া থেকে বদলি হয়ে ধুনট থানায় যোগদান করেন।

গত দু’মাস আগে পাওনা টাকা চেয়ে শাহানুরকে উকিল নোটিশ দেন কহিনুর। কিন্ত উকিল নোটিশে সাড়া না পেয়ে বগুড়া আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার প্রস্তুতি নেন কহিনুর। খবর পেয়ে শাহানুুর রহমান এক সপ্তাহ আগে কহিনুর খাতুনকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিষয়টি মিমাংসা করে নেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কহিনুর পাওনা টাকা নিতে ধুনট থানায় আসে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহানুর রহমান পিটিয়ে থানা থেকে কহিনুরকে বের করে দেন। আহত কহিনুর ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এলে সেখানেও পেটাতে থাকেন শাহানুর। এসময় স্থানীয় লোকজন কহিনুর খাতুনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।’’

এ বিষয়ে কহিনুর খাতুন বলেন, ‘শাহানুর কৌশলে আমার নিকট থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। সেই টাকা চাইলে সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি তার প্রস্তাবে রাজি হইনি। এতে সে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারপর থেকে সে আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে। এর ফলে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেই। এ বিষয়টি জানার পর শাহানুর টাকা দেওয়ার কথা বলে কৌশলে থানায় ডেকে এনে আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে।’

এ বিষয়ে শাহানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সে আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিল। অবশেষ ঝামেলা এড়াতে তাকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আপোষ নামায় সাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তারপরও বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে আমাকে মামলার ভয়ভীতি দেখালে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে চড়থাপ্পর মেরেছি।

খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরের দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন ও গাজিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত কহিনুরের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসেছেন। তারা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।