চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পশ্চিমবঙ্গের আরো উদার হওয়ার সুযোগ রয়েছে: ঋতুপর্ণা

‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমার প্রচারণায় চ্যানেল আই অনলাইনে ঋতুপর্ণা

‘শ্বেতপাথরের থালা’, ‘দহন’ থেকে ‘আমি সেই মেয়ে’, ‘সাগরিকা’ হয়ে ‘প্রাক্তন’ বা ‘এক কাপ চা’। দীর্ঘ ২৩ বছরের সেলুলয়েড পথচলা তার। কার? ঋতুপর্ণার। ঋতুপর্ণ সেনগুপ্ত। ‘আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে/ সাগরিকা বেঁচে আছি’ কিংবা ‘তুমি যাকে ভালোবাসো/ স্নানের ঘরে বাস্পে ভাসো’র ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বাংলাদেশ এবং ভারত দুই দেশেই সমান জনপ্রিয়তা তার। বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছিল তার অভিনীত ‘এক কাপ চা’ সিনেমাটি।

বাংলাদেশে ১৩ এপ্রিল মুক্তি পেতে যাওয়া ‘একটি সিনেমার গল্প’র প্রচারণা অংশ নিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ঢাকায় অবস্থান করছেন মঙ্গলবার সকাল থেকে। এদিন রাতে এসেছিলেন চ্যানেল আইয়ে। সংক্ষিপ্ত অবসরে একান্তে কথা বলেছেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে:

অনেকদিন পর আপনার অভিনয়ে বাংলাদেশের সিনেমা ‘একটি সিনেমার গল্প’ মুক্তি পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
ভীষণ ভালো লাগছে। ভেবে অবাক হই কতোটা সময় চলে গেল। কতগুলো সিনেমাও হল বাংলাদেশে।আলমগীর ভাই, মান্না, ফেরদৌস থেকে শুভ। কতজনের সঙ্গে যে কাজ হল। প্রতিটা পর্ব আমার জন্য অসাধারণ। যতবারই বাংলাদেশের সিনেমাতে কাজ করেছি পুরোটা বাংলাদেশ হৃদয়ে মেখেছি। ‘একটি সিনেমার গল্প’ পুরো শুটিং বাংলাদেশে হয়েছে। দিনগুলো খুব আনন্দে কেটেছে।

শুভ’র সঙ্গে জুটি বেঁধে কেমন লাগল? খুব লেগপুলিং চলেছে শুনলাম?
খুব মিষ্টি একটা ছেলে। যোগ্য ছেলেও। আরো অনেকদূর যাবে। আলমগীর ভাইয়ের সিনেমাতে কি যে ভালো কাজ করেছে তা বলে বোঝানো যাবে না। আমাদের জুটি দর্শক উপভোগ করবেন এটি নিশ্চয়তা দিতে পারি। ইনফ্যাক্ট ওর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ছবিতেও জুটি বাঁধছি কিন্তু। আর লেগপুলিং! সে কথা বলতে। আমি আর আলমগীর ভাই মিলে সমানে জ্বালিয়েছি ওকে। কিছু বলতোনা কিন্তু মাঝে মাঝে সেট থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন বলত! (হাহাহা)

ট্রেলারে দেখেছি। আপনি বলছেন, এখানে লাইট আছে/ ক্যামেরা আছে, অ্যাকশন-কাট আছে কিন্তু সুখ নেই গো!’। নিজেকে রিলেট করতে পারেন?
সংলাপটি অসাধারণ। এটি আমাদের একটি সিনেমার গল্পের সংলাপ। খুব সত্য। আমাদের সিনেমা ভুবনকে অনেকে খুব রঙ্গীন মনে করে কিন্তু আমাদের যাপিত জীবনেও কিন্তু সব অনুভূতির যাওয়া আসা আছে। কি অসাধারণ যে লেগেছে সংলাপটা, বলে বোঝাতে পারব না। আর হ্যাঁ, সিনেমায় আমার নাম কবিতা। এটাও দারুণ সিম্বলিক মনে হয়েছে।

ক্লান্তি ফিল করেননা কখনও? লাইট ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে দাঁড়াতে…?
হ্যাঁ। কিছুটা ক্লান্তিতো ভর করেই। তবে অভিনয়টা আমার কাছে প্রার্থনার মত। ক্লান্তি কাটিয়ে নেই প্রার্থনার ওপর ভর করে। আমি অভিনয় করব বলে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। নিজেকে তৈরী করেছি। এটা আমার কাছে প্রেম-পূজা-প্রার্থনা সব কিছু।

যোগ ব্যায়াম, ব্যাডমিন্টন বা নাচ কি কাজে আসে ক্লান্তি কাটাতে?
খোঁজতো ভালই রাখেন। সেতো বটেই, ইয়োগা আমার পরম এক আশ্রয়। আর ওড়িশি-মনিপুরী আমার অনেকটা দ্বিতীয় স্বত্তার মত। আমার একটা নাচের ট্রুপস আছে জানেন? খুব ইচ্ছা আছে ট্রুপটা নিয়ে আপনাদের এখানে আসতে। আর ব্যাডমিন্টনের কথা বলছেনতো!  আই জাস্ট লাভড টু প্লে ব্যাডমিন্টন।  আর থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দ আমার অনেক স্ট্রেস কমিয়ে দেয়।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শনে একটা বড় কার্পণ্যতা রয়েছে বলে দৃশ্যমান। আপনাদের মত যারা প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতা রাখেন সেখানে তারা তো এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন। যেখানে আপনি দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের বাংলাভাষীদের মধ্যে সেতুবন্ধ হয়ে কাজ করছেন!
দেখুন, এটা দুটি রাষ্ট্রের বিষয়। মন্তব্য করাটা সমীচিন নয়। তবে এটুকু বলব, এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের আরো উদার হওয়ার সুযোগ আছে। আর কথাবার্তা কিন্তু চলছে না তা নয়। আমাদের দুই দেশের আদান প্রদানে দুই দেশেরই লাভ। এটা নিশ্চয় কর্তা ব্যক্তিরা বোঝেন। তাদের ওপর পূর্ণ আস্থাই আছে আমার। আমরা কিন্তু আমাদের মত বলছি এসব বিষয়ে!

গাড়িতে উঠে যান ‘চিত্রাঙ্গদা’। সকালে ঢাকায় নেমে আর ঘুমোনই হয়নি যে। এখন একটু ঘুমাতে হবে চোখের নীচ থেকে ক্লান্তি মুছে ফেলতে। বুধবার দুপুর থেকে প্রচারণায় আবার ব্যস্ততা। ১৩ এপ্রিল সিনেমা হলে নিজের সিনেমা দেখে এবং পরদিন পহেলা বৈশাখ দেখে তারপর আবার নিজ দেশ ভারতে ফিরতে হবে তো!

ফিচার ছবি: তানভীর আশিক