চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দলবদলের সময়সীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। আবার নতুন মৌসুমে দলবদলের লড়াইয়ে নামবে ইউরোপের হেভিওয়েট ক্লাবগুলো। তবে এখন থেকেই খেলোয়াড়দের তালিকা কিন্তু করতে শুরু করে দিয়েছে তারা। আর সেই তালিকায় ইউরোপের প্রায় সব হেভিওয়েটের নজরেই রয়েছে পর্তুগালের তরুণ ফুটবলার জোয়াও ফেলিক্স।
কে এই ফেলিক্স? যাকে রাডারে রেখেছে মাদ্রিদ। তারা ছাড়াও, জুভেন্টাস, এসি মিলান, বার্সেলোনা, বরুশিয়া ডর্টমুন্ডও প্রতিনিধি পাঠিয়ে তাকে নজরে রেখেছে। তার রিলিজ ক্লজ রাখা হয়েছে ১২০ মিলিয়ন ইউরো।
পর্তুগালের অন্যতম ঐতিহ্যপূর্ণ ফুটবল ক্লাব বেনফিকার ফুটবলার ফেলিক্স। আগামী দিনের তারকা বলা হচ্ছে তাকে। ১৯ বছর বয়সী এই ফুটবলার চলতি মৌসুমে ৯টি লিগ ম্যাচে চারটি গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করেছেন।
গত কয়েক বছর রীতিমতো দাপিয়ে খেলছেন বেনফিকার জার্সিতে। ২০১৫ সালে প্যাডরোনেস থেকে বেনফিকায় যোগ দেন তিনি। তার আগে ৬ বছর পর্তুগালের আরেক জনপ্রিয় দল পোর্তোর ফুটবলার ছিলেন। তার প্রাইমারি পজেশন দ্বিতীয় স্ট্রাইকার। তবে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এবং উইঙ্গার হিসাবেও খেলতে পারেন ফেলিক্স।
ব্রাজিলিয়ান ফিলিপ কৌতিনহোর খেলার সঙ্গে তার অনেকটা মিল রয়েছে। খুব স্কিলফুল এবং টেকনিক খুবই ভালো। রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ তাকে নিজেদের রাডারে রেখেছে। অনেকে তাকে নতুন ‘ক্রিস্টিয়ানো’ তকমা দিচ্ছেন।
সৃজনশীলতা এবং খেলায় গতি আনার ব্যাপারে ফেলিক্সের মধ্যে রুই কস্তা ও জিনেদিন জিদানের ছায়া দেখছেন অনেকে। জোহান ক্রুইফ ও বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলা পর্তুগালের আরেক তারকা বেনার্দো সিভলাকে তার মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ।
সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার হিসাবে লিসবন ডার্বিতে গোল রয়েছে তার। ফেলিক্সের খুব কাছের একটি সূত্র ইএসপিএনকে জানানো হয়েছে, তাকে রাডারে রেখেছে মাদ্রিদ। তবে তারা ছাড়াও, জুভেন্টাস, এসি মিলান, বার্সেলোনা, বরুশিয়া ডর্টমুন্ডও নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে তাকে নজরে রেখেছে। তার রিলিজ ক্লজ রাখা হয়েছে ১২০ মিলিয়ন ইউরো।
সিনিয়র দলে অভিষেক হওয়ার পর প্রথম ১ হাজার মিনিটের পারফরম্যান্সে ফেলিক্স ছাড়িয়ে গেছেন তার স্বদেশি গ্রেট রোনালদোকেও। এই সময়ে ফেলিক্স গোল করেছেন আটটি ও অ্যাসিস্ট তিনটি। রোনালদো তার প্রথম এক হাজার মিনিটে গোল করেছিলেন তিনটি ও অ্যাসিস্ট একটি।
শুধু রোনালদোকে নয়, ফেলিক্স ছাড়িয়ে গেছেন নেইমার ও কাইলিয়ান এমবাপেকে। প্রথম এক হাজার মিনিটে নেইমার করেছিলেন চার গোল ও দুই অ্যাসিস্ট। আর এমবাপে চার গোল ও ছয় অ্যাসিস্ট।
স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক এএস জানাচ্ছে, প্রথম এক হাজার মিনিটে একমাত্র লিওনেল মেসিই আছেন ফেলিক্সের উপরে। বার্সেলোনা সুপারস্টার নিজের প্রথম এক হাজার মিনিটে সিনিয়র জার্সিতে করেন ১৩ গোল ও আট অ্যাসিস্ট।
টুটো স্পোর্টকে দেয়া সাক্ষাতকারে ফেলিক্স জানান, ‘মিডিয়াতে তুলনা নিয়ে বা কোনও নম্বর নিয়ে আমি ভয় পাই না। আমি পেশাদার ফুটবলার। আমার বাবা অ্যাথলেটিক্স কোচ ছিলেন এবং আমার সম্পর্কে ভালো মতোই জানেন। তারপর আমার কাছে বিশ্বের সেরা এজেন্ট আছে। জর্জ মেন্ডেস। পর্তুগালের সব সেরা ফুটবলাররা বিশ্বের সেরা লিগগুলোতে খেলেছেন। আমিও তাই চাই।’
তিনি আরও বলেন, “আমি ক্রিস্টিয়ানো সঙ্গে খেলতে চাই। কারণ তিনি সবচেয়ে সেরা ফুটবলার। একটা আইকন। বিশ্বের আইকন। সবার কাছে উদাহরণ। তার মতো দুর্দান্ত ফুটবলারের সঙ্গে খেলতে পারলে, আমি নিজেকে আরও তৈরি করতে পারবো।’
পর্তুগালের ক্লাব থেকেই অ্যালেক্স ফার্গুসনের নজরে পড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। টিনেজার হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়ে পরে হয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ওল্ড ট্রাফোর্ড হয়ে বার্নাব্যু, তারপর তুরিন, সবখানেই একের পর এক ইতিহাস লিখছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী সিআর সেভেন। ক্যারিয়ারের উষালগ্নে রোনালদো তকমা পেলেও ফেলিক্স কতদূর যেতে পারবেন? এই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র সময়ের হাতেই।