শ্রমিক ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষের হয়রানি করার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু সন্ত্রাসবিরোধী ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মুখে কালো মবিল মেখে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। শ্রমিকদের আন্দোলনে নারী নির্যাতন, শিশুহত্যা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে তারা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল ‘ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কেন?’, ‘আলকাতরা সন্ত্রাস নিপাত যাক’, ‘দেশের বুকে চুনকালি শ্রমিক নেতার নেই বুলি’, ‘স্কুল ড্রেসে কালি কেন?, ‘কালি নাকি কলঙ্ক?’ ইত্যাদি ।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একজন শ্রমিকনেতা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, কিন্তু তিনি বলেছেন আন্দোলন সম্পর্কে কিছু জানেন না। তিনি একদিকে শ্রমিক নেতা অন্যদিকে মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। যখন সংসদে আইনটি পাশ হয়েছে, তখন তিনি এটিকে সমর্থনও করেছেন। আবার তিনি কেন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এটা কোন আন্দোলনের আচরণ হতে পারে না। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে যেতে পারছেনা। পুরো দেশটা এখন অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আবদুল করিম বলেন, ‘সংবিধান যেকোনো রাষ্ট্রের নাগরিকদের আন্দোলন করার অধিকার দিয়েছে। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তবে, তারা আন্দোলনের নামে কোন নাগরিকের চলাফেরা করার অধিকার এবং তাদের পধ অবরোধ করার অধিকার সংবিধান তাদের দেয়া হয়নি। যখন যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিল, তখন তাদেরকে দমন করতে হেলমেট বাহিনী মরিয়া হয়ে ওঠেছিল। আজকে যখন সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তখন পুলিশ বাহিনী এবং হেলমেট বাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করছে।
গতকাল যে শিশুটি মারা গেছে,এটাকে আমরা মৃত্যু বলতে পারি না। এটা একটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা শ্রমিকদের আন্দোলনের বিপক্ষে না। কিন্ত এধরনের অরাজকতা কোনো শ্রমিক করতে পারে না। এধরনের অপকর্মগুলো একটি মাফিয়া চক্র দ্বারা করা হচ্ছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এসব অরাজকতা মেনে নিতে পারি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
শিক্ষার্থীরা এসময় তিনটি দাবির কথা বলেন। দাবিগুলো হল: শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে, আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি না করা এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য রোগী বহনকারী গাড়ি চলাচল করতে দিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, পুরো পরিবহন সেক্টরকে নিয়ন্ত্রণ করছেন শাহজাহন খান। এখানে শ্রমিকদেরকে সাধারণ মানুষের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের মাফিয়া শ্রেণী নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।