যোগাযোগ অবকাঠামোখাতে আরও স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে বড় প্রকল্পগুলোর জন্য আগামী অর্থবছরের জন্য আলাদা বাজেট করা হচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে বড় প্রকল্পগুলোর জন্য প্রথমবারের মতো আলাদা বাজেটও করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ৮ টি মেগা প্রকল্পের জন্য এইরকম আলাদা আলাদা বাজেট দেওয়া হবে। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হবে পদ্মা বহুমূখী সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে।
চলতি অর্থবছরে শুরু হওয়া নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর ৩৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলছে মূল সেতুর পাইলিংয়ের কাজ। ক্যাপিটাল বাজেটের আওতায় আগামী অর্থ বছরে এ প্রকল্পের জন্য রাখা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৩‘শ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাজেটে পদ্মা সেতুর পর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হবে প্রায় ৪ হাজার ২‘শ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকা থেকে খুলনা রেলপথে দিয়ে যেতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘন্টা। পদ্মা সেতুর সাথে একই দিনে ২০১৮ সালে উদ্বোধন করা হবে এ প্রকল্প।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এই বাজেটে আটটি প্রকল্প রাখা হবে এবং একই বছরে এর সাথে আরো দুটি প্রকল্প যোগ হবে।
এ অর্থ বছরেই পিপিপি‘র আওতায় শুরু হয়েছে বিমানবন্দর থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালি পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মান কাজ। তিন ধাপে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ের ৭ ভাগ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরের এ প্রকল্পে বরাদ্দ থাকবে প্রায় ১ হাজার ২‘শ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে মেট্রোরেল প্রকল্পের ভূমি জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মুল সড়কের মাঝখানে রোড ডিভাইডারের যেসব জায়গায় মেট্রোরেলের পিলার থাকবে সেই জায়গার মাটি পরীক্ষার কাজও শেষ। ডিপো তৈরির কাজ চলছে। এ প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে রাখা হবে প্রায় ২ হাজার ৩‘শ কোটি টাকা। ।
গত বছরের ১০ জুন কর্ণফুলী নদীর তলদেশ টানেল নির্মানে চীন এবং হংকংয়ের দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হয়। ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেল নির্মানে ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০১৮ সালে। এ প্রকল্পের জন্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ বরাদ্দ রাখা হবে ১ হাজার ৯‘শ কোটি টাকা।
পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে চলতি অর্থবছরে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে সংসদে পাশ হয়েছে ভূমি অধিগ্রহন আইন ২০১৬। ৬ হাজার ৩‘শ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০১৩ সালে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকা চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ ৪ লেন প্রকল্পের কাজ শেষ। রাজধানীর সাথে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ সহজ করতে শুরু হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল ৪ লেন প্রকল্পের কাজ। এ প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে সাড়ে ৪‘শ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
রাধানীর সাথে বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে যেমন পদ্মা সেতু,পদ্মা রেলসেতুসহ ৪ লেন প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে তেমনি এসব যানবাহন রাজধানীতে প্রবেশের পর যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সেজন্য রাজধানীতে চলছে বিভিন্ন ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল ও এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ের মতো বড় প্রকল্পগুলোর কাজ। সময়মতো এসব প্রকল্প শেষ করতে জাতীয় বাজেটেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে গুরুত্বের সাথে।