বেঁচে থাকতে একুশে পদক না পেলেও মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারটি পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পপ সম্রাট খ্যাত সংগীতশিল্পী আজম খান।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই স্বীকৃতি দিলো সরকার। বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
যুগ্ম সচিব মো.ফয়জুর রহমান ফারুকীর স্বাক্ষরিত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৯ সালের একুশে পদকপ্রাপ্ত আজম খানের নাম দেখে যোগাযোগ করা হয় প্রয়াত আজম খানের বড় ভাই ও কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক ও সুরকার আলম খানের সঙ্গে।
তখনো তিনি আজম খানের মরণোত্তর একুশে পদক প্রাপ্তির খবরটি জানেন না। পদকপ্রাপ্তির বিষয়টি তাকে বলার পর তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, খুব খুশি হলাম। আলহামদুলিল্লাহ! তবে আরো বেশী খুশি হতাম, একুশে পদকটি আজম খান জীবিত অবস্থায় পেলে! তখন আরো ভালো লাগতো। এখন সেতো সমস্ত পুরস্কারের উর্দ্ধে, দেখে যেতেতো পারলো না এই সম্মান, এই পুরস্কার।
আলম খান আরো বলেন, জীবিত অবস্থায় একুশে পদক পাওয়ার যোগ্য ছিলো আজম খান। সেতো শুধু গায়ক ছিলো না, মুক্তিযোদ্ধাও ছিলো। কমান্ডার ছিলো। সেই হিসেবে আরো আগেই তার পাওয়া উচিত ছিলো।
বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ফয়জুর রহমান ফারুকীর স্বাক্ষরে এ বছর একুশে পদক প্রাপ্ত ২১ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই তালিকায় শিল্পকলায় (অভিনয়, সংগীত, আলোকচিত্র ও চারুকলা) বিশেষ অবদান রাখার জন্য মোট আটজন গুণী ব্যক্তিত্বর নাম ঘোষণা করা হয়।
আজম খান ছাড়াও শিল্পকলায় অবদান রাখার জন্য এবার একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে সুবর্ণা মুস্তাফা (অভিনয়), সুবীর নন্দী (সংগীত), লাকী ইনাম( অভিনয়), লিয়াকত আলী লাকী(অভিনয়), খায়রুল আলম শাকিল (সংগীত), সাইদা খানম (আলোকচিত্র) এবং জামাল উদ্দিন আহমেদ (চারুকলা)।
আজম খানের গাওয়া অসংখ্য গান আজও বাঙালির হৃদয়ে ঢেউ তুলে। বাংলাদেশের বাইরেও রকস্টার হিসেবে তার নাম উচ্চারিত হয়। তার গাওয়া বেশ কিছু গান সত্তর এবং আশির দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ওরে সালেকা- ওরে মালেকা, আলাল ও দুলাল, অনামিকা, অভিমানি, আসি আসি বলে ইত্যাদি গানগুলো এখনো মানুষের মনে জীবন্ত। ‘আমি বাংলাদেশের আজম খান, বাংলাতে গাই পপ গান…’ এই গানটির মধ্য দিয়ে আজম খানের জীবনের কিছু অংশ চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি নিজেই গানটি লিখেছিলেন।
২০১১ সালের ৫ জুন দূরারোগ্য ক্যান্সারে ভোগে আজম খান মারা যান বটে, কিন্তু তার চিরস্মরণীয় গানগুলোর জন্য তিনি আজীবন সাধারণ মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন। তাদের জন্যইতো তিনি আজীবন গান করে গেছেন।