ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে আবাসন খাতের শীতকালীন রিহ্যাব ফেয়ার। বুধবার বড় দিন উপলক্ষে ছুটি থাকায় মেলায় কানায় কানায় ভরে গেছে ক্রেতা-দর্শনার্থীতে। প্রত্যেকটা স্টলে ছিল দর্শনার্থীদের ভীড়। কেউ প্লট, কেউ ফ্ল্যাট সম্পর্কে নানা তথ্য জানছেন স্টলের দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিদের কাছ থেকে।
বুধবার বিকেলে সরেজমিনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চলমান আবাসন মেলায় এ চিত্র দেখা গেছে।
স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধিরা নিজেদের প্রজেক্টের নানা বৈশিষ্ট্য গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরছেন। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগের জন্য তাদের নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার সংগ্রহ করছেন।
আবার গ্রাহকদের কেউ কেউ পছন্দ মত ফ্ল্যাট বুকিং দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সাথে আলোচনা করছেন। ফ্ল্যাটের স্থান, দাম, জায়গার পরিমাণসহ নানা তথ্য জানছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ি, ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ নানা অফার দিচ্ছে। এরমধ্যে ট্রপিক্যাল হোমসে ফ্ল্যাট বুকিং দিলে গাড়ি দেয়ার অফার দিচ্ছে। নাভানা রিয়েল এস্টেট ঘর সাজাতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার আসবাবপত্র দেয়ার অফার দিচ্ছে।
ক্রেতারাও সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট কেনার জন্য বিভিন্ন অফারের খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি দামের বিষয়ে দর কষাকষি করছেন।
রাজধানীর মিরপুর থেকে মেলায় এসেছেন সরকারি চাকরিজীবী সোহেল খান। তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ছুটির দিন হওয়ায় আজ এখানে এসেছি। আমার বাড়ি বরিশালে। ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনার মত সামর্থ নেই। তাই বরিশালে কেনার চিন্তা করছি। বাকলা ডেভেলপারে কথা বলেছি। সরেজমিনে প্রজেক্ট দেখে বুকিং দেয়ার বিষয়ে চিন্তা করবো।
এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে ২৩০ টি স্টল। এর মধ্যে ১১৬টি আবাসন, ৩০টি নির্মাণসামগ্রী এবং ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান।
তবে এবারের মেলায় ঢাকার বাহিরের থেকেও আবাসন কোম্পানি অংশ নিয়েছে। প্রথমবারের মতো রিহ্যাব ফেয়ারে অংশ নিয়েছে বরিশাল বিভাগ থেকে বাকলা ডেভেলপারস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সফলতার সাথে আমরা গ্রাহকের ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছি। আমরা চাই বরিশালের মানুষ উন্নত মানের ফ্ল্যাটে থাকুক।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক হাজারের বেশি সংখ্যাক সদস্য রয়েছে রিহ্যাবের। কিন্তু মাত্র ২৩০ টি কোম্পানি মেলায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর বাহিরের থেকে এসে জাতীয় পর্যায়ের এই মেলায় অংশ নিয়েছে বরিশালের বাকলা ডেভেলপার্স। চলতি বছরে রিহ্যাবের সদস্য পদ লাভ করেই মেলায় অংশ নিয়েছি, এতে প্রমাণিত হয় আমরা কতটা সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সব নিয়ম-কানুন মেনেই ভবন নির্মাণ করছেন দাবি করে তিনি বলেন, বরিশাল বাস স্ট্যান্ডের পাশে নূর প্যালেস ও তাজ প্যালেসে ফ্ল্যাট বিক্রি করছি। মেলা উপলক্ষ্যে ফ্ল্যাট বুকিংয়ে ১০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি।
মেলায় স্বদেশ প্রোপার্টিজে রেডি প্লট পাওয়া যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৬৫ লাখ টাকায়। এই প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, গ্রাহকদের কোনো বিড়ম্বনা ছাড়াই তারা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে থাকেন।
তবে মেলায় ৩০ লাখ টাকার মধ্যে ফ্ল্যাট খুঁজে পাওয়া অনেকটা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট আকৃতির বেশিরভাগ ফ্ল্যাটের দাম ৬০ লাখ টাকার আশেপাশে। আর মাঝারি আকারের ভাল মানের ফ্ল্যাটের দাম পড়বে ১ থেকে দেড় কোটি টাকা।
মেলায় সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবে। মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি অপরটি মাল্টিপল এন্ট্রি। সিঙ্গেল টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে।