বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নতুন করে পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে শুরু থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমসহ সবাই চেয়েছিল খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর খুনিদের ধরতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, হাইকোর্টের ভূমিকাসহ নানা কারণে এই হত্যাকাণ্ড আলোচিত হয়ে উঠেছিল। এর মধ্যেই খবর আসলো রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী নয়ন বন্ড পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
এবার হাইকোর্ট এ বিষয়েও কথা বলেছেন। রিফাত হত্যা মামলার অগ্রগতি জানানোর সময় হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পছন্দ করি না।’ উচ্চ আদালতের এই অবস্থানের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি।
আমরা সবসময়ই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। কারণ, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বৈধতা পেলে বিচারহীনতার সুযোগে তা ব্যক্তি স্বার্থেও যে ব্যবহার হতে পারে সেই ভয়ঙ্কর উদাহরণ আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি। তাই এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।
বরগুনার ঘটনায় আদালত আরও বলেছেন: ‘একদিনেই এই নয়ন বন্ড তৈরি হয়নি। তাকে লালন করা হয়েছে। ক্রিমিনাল বানানো হয়েছে।’ আদালতের এই বক্তব্য যথার্থ।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন এসেছে। নয়নের প্রশ্রয়দাতা হিসেবে প্রভাবশালীদের নাম এসেছে। এছাড়া নয়ন বন্ডের সহযোগী হিসেবে যারা রিফাতকে কুপিয়েছিল, তাদের কয়েকজনও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এক নেতার ঘনিষ্ঠ বলেই জানা গেছে।
এছাড়া নয়ন বন্ডের অপরাধের মাত্রা একদিনেই এই পর্যায়ে আসেনি। এর আগেও নয়নের অপরাধ প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু তখন তাকে দমাতে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বিভিন্ন ঘটনায় দেশের নানা স্থানে প্রায় একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আরও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে নতুন করে কোনো নয়ন বন্ড তৈরির পথ যেমন বন্ধ হবে, তেমনই বেঁচে যাবে আরও অনেক রিফাত।