চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নো ফোর্সড টিসি

নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই বিক্ষোভকে শুরুতেই যৌক্তিক বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনও আশ্বাস দিয়েছেন, সমস্যার সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তারা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন বলে সরকার এবং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, এমন ন্যায্য আন্দোলনেও বিভিন্ন পক্ষ গুজব ছড়ানো হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে, রাজধানীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্দোলনে যাওয়ার অপরাধে ৪৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি। বরং রাজধানীর কয়েকটি কলেজের শিক্ষকদের এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় দেখা গেছে। শিক্ষকদের এই সংহতি প্রশংসার যোগ্য।

ছড়িয়ে পড়া এমন খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন চ্যানেল আইকে বলেছেন: ‌‘এই আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে কোনো শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।’

তিনি জানিয়েছেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দিকে নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় যেনো কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’

নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের খবরও আমরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর এসব উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা আশা করি, শিগগিরই শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে তাদেরকে পড়ার টেবিলে ফেরত পাঠানো হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের গুজব থেকে দূরে থাকতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকেও তাদেরকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। নাহলে তাদের এই অভূতপূর্ব আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে, যা কখনোই কাম্য নয়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু থেকেই এ বিষয়ে খুব সহনশীল থাকায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে যা দেখিয়ে দিল, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবহন খাতসহ সকল ক্ষেত্রকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বলে আমরা মনে করি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্দোলনের সমাপ্তি টেনে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে হবে। কারণ, আন্দোলন কোথায় থামাতে হবে সেটা না জানলে কোনো আন্দোলনই সফল হয় না। আমরা বিশ্বাস করি, স্মার্ট এই শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টি খুব ভালোভাবেই জানে।

সে সঙ্গে আন্দোলনে যোগদানের কারণে কোনো ‘ফোর্সড টিসি’ না দিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেজন্য আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়রে মতো আমরাও আশা করি, রোববার থেকে স্কুল-কলেজে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম চলবে। সব পক্ষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।